সাকিব-তামিমের তাণ্ডবে টাইগারদের রানের পাহাড়
স্পোর্টস ডেস্ক।।
স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তামিমের সেঞ্চুরির সঙ্গে সাব্বির-সাবিকের অসাধারণ দুটি হাফ সেঞ্চুরির ওপর ভর করে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ৫ উইকেটে ৩২৪ রানের লড়াকু সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ। টাইগারদের জন্য সুখবর, শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডেতে কোনও দল ৩০০’র উপরে রান তাড়া করে সফল হয়নি।
শনিবার (২৫ মার্চ) রনগিরি ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডের সিরিজে প্রথম ওয়ানডেতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ নামে ব্যাটিংয়ে। প্রথম চার ওভারে বেশ নজর কেড়েছিলেন তামিম। উদ্বোধনীতে বড় জুটি গড়ার ইঙ্গিত দেন তিনি। কিন্তু উপযুক্ত সঙ্গ দিতে পারেননি সৌম্য। পঞ্চম ওভারে অফ স্টাম্পের বাইরের বলটির লেংথ বুঝতে পারেননি সৌম্য সরকার। সুরঙ্গা লাকমলের দেরিতে সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বল ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। পারেননি, ব্যাটের কানায় লাগা ক্যাচ সহজেই গ্লাভসে নেন দিনেশ চান্দিমাল। ১৩ বলে দুটি চারে ১৩ রান করে সৌম্য ফিরে যাওয়ার সময় বাংলাদেশের স্কোর ২৯/১।
১৯তম ওভারে টাইগারদের দলীয় শতক পূর্ণ হয়। ২০তম ওভারে সাব্বির ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতকের দেখা পান। ৪৮ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৫০ করেন সাব্বির। তবে, ইনিংসের ২২তম ওভারে বিদায় নিতে হয় সাব্বিরকে। গুনারত্নের বলে থারাঙ্গার তালুবন্দি হয়ে ফেরেন ৫৬ বলে ৫৪ রান করা সাব্বির। দশটি বাউন্ডারিতে তিনি এই ইনিংসটি সাজান। দলীয় ১১৯ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তামিম-সাব্বির মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৯০ রান।
এরপর অপরাজিত থাকা তামিম ইকবালের সঙ্গী হন মুশফিকুর রহিম। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। সান্দাকানের বলে ব্যক্তিগত ১ রানে সান্দাকানের বলে কট এন্ড বোল্ড হয়ে যান তিনি। তামিমের নতুন সঙ্গী হন তার প্রিয়বন্ধু বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। স্বভাবিরুদ্ধ ব্যাটিং করে ৭৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন তামিম ইকবাল। এরপর ১২৭ বলে ১২ বাউন্ডারিতে পূরণ করে সেঞ্চুরি।
এরপর ৬১ বলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি করে তামিমকে উপযুক্ত সঙ্গ দেন সাকিব। তাদের জুটিটি ছিল ১৪৪ রানের। সুরাঙ্গা লাকমলের বলে সান্দাকানের হাতে ক্যাচ দেন সাকিব, শেষ হয় তার ৭১ বলে ৭২ রানের ইনিংস।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম শতক হাঁকিয়ে ১২৭ রানে বিদায় নেন তামিম। কুমারার বলে ইনিংসের ৪৮তম ওভারে গুনাথিলাকার হাতে ধরা পড়েন তামিম। ১৪২ বলে ১৫টি চারের পাশাপাশি তামিমের ইনিংসে ছিল একটি ছক্কার মার। দলীয় ২৮৯ রানের মাথায় টাইগারদের পঞ্চম ব্যাটসম্যান হয়ে ফেরেন তামিম। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৭ বলে একটি ছক্কায় ১৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। শেষ সময়ে ব্যাটে ঝড় তুলেন মোসাদ্দেক হোসেন। ৯ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কায় ২৪ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
অতীত পরিসংখ্যান বাংলাদেশের বিপক্ষে হলেও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে অতিথিরা। ডাম্বুলাতে বাংলাদেশের কোনও সুখস্মৃতি না থাকলেও সমস্যা নেই। সর্বশেষ তিন ম্যাচের সবকটিই লঙ্কানরা হেরেছে ডাম্বুলাতে। যদিও শততম ম্যাচটি হেরে খানিকটা তেতে আছে লঙ্কান ক্রিকেটাররা। তাই শনিবার কে ভাগ্য বদলাবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
বাংলাদেশের জন্য বড় প্রাপ্তি মানসিক ভাবেও অনেকখানি এগিয়ে থেকে মাঠে নামার সুযোগ পাবে মাশরাফিরা। কেননা বাংলাদেশের বিপক্ষে কলম্বোতে শততম টেস্ট ম্যাচটি হেরে যাওয়ার পর এমনিতেই লঙ্কান সংবাদ মাধ্যম তাদের ক্রিকেটকে মৃত ঘোষণা করেছে! এর মধ্যে সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা ওয়ানডে সিরিজের পাঁচটি ম্যাচই বড় ব্যবধানে হেরেছে লঙ্কানরা। সবকিছু মিলিয়ে অনেক চাপ নিয়েই মাঠে নামবে শ্রীলঙ্কা। যদিও ডাম্বুলাতে বাংলাদেশের হয়ে পরিসংখ্যান কথা বলছে না। কেননা তিনটি ম্যাচের সবগুলোতেই বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছে লাল-সবুজদের। শুধু তাই নয়, তিন ম্যাচের দুটিতে ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের রেকর্ডবুকে বেশ কয়েকটা রেকর্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে।