নিম্নমুখী ফল নিয়ে যা বললেন শিক্ষামন্ত্রী
বিজ্ঞানে জোর দিতে গিয়ে মানবিকের ফল অপেক্ষাকৃত খারাপ হয়েছে। আর খাতা ভালো করে দেখার কারণেই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফল নিম্নমুখী। সব মিলিয়ে গুণগতমান ঠিক রাখতেই এ অবস্থা হয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলঅম নাহিদ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিক ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম এসব কথা জানান। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এবারের পরীক্ষা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। বলা যায় এবারের পরীক্ষা প্রশ্নমুক্তভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এবার পরীক্ষা প্রশ্নবিদ্ধ করার কারও সুযোগ ছিল না। এমনকি কোনও গুজবও কেউ রটাতে পারেনি। পরীক্ষার্থী বাড়ছে। ঝরে পড়া কমেছে। সংখ্যাগত এবং গুণগত দিক থেকে বিজ্ঞান পরীক্ষায় উন্নতি অভ্যাহত আছে। কারিগরি শিক্ষাতেও পরিবর্তন এসেছে, এই পরীক্ষার ফলাফলে তা প্রমাণিত হয়। আমাদের ছাত্রীদের সমতা অর্জনে সমাজে সার্বিকভাবে বড় ধরনের পরিবর্তন অব্যাহত আছে।’ পাসের হার নিম্নমুখী স্বীকার করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘অন্যান্য দেশের তুলনায় সংখ্যায় আমরা বেশি এগিয়ে আছি। এখন আমরা গুণগত মানের দিকটায় গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা ক্লাস নেওয়া ও ভালোভাবে পরীক্ষা নেওয়ার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। ঠিকভাবে যেন খাতা দেখা হয়, সেদিকে নজর দিচ্ছি। যা বাস্তব, যা সত্য সেই ফল বেরিয়ে এসেছে। আমরা কাউকে নম্বর বাড়িয়ে দিতে বলি না, কমাতেও বলি না। আমরা শিক্ষকদের বাধ্য করছি সঠিক মূল্যায়নের।’ মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখবো। সংশ্লিষ্ট বোর্ডগুলোও দেখবে, মূল্যায়ন করবে। কেন খারাপ হলো, আমাদের বোর্ডগুলো দেখবে। প্রয়োজন হলে মন্ত্রণালয়গুলো দেখবে। আমরা সসমস্যা চিহ্নিত করবো।’ শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা বিষয়টি গুরুত্বহীন মনে করি না। যারা আসে তাদের সবাইকেই পাস করাতে চাই। আমাদের দেশে এখন সে অবস্থা নেই। যখন বেশি পাস করেছে, তখন সবাই বিস্মিত হয়েছে। আমরা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছি। আগে বেশি পাস করতো, বলা হতো ভালোভাবে খাতা দেখা হয়নি। আবার এখন কম পাস করেছে, এখন বলা হচ্ছে— পাসের হার কমে গেলো কেন। বেশি পাস করলেও অপরাধ, কম পাস করলেও অপরাধ। আসলে আমরা এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে খাতা দেখার মান ঠিক রাখতে গিয়ে, পাসের সংখ্যা কিছুটা কম হবে এটা স্বাভাবিক।’ বিজ্ঞানে ফল বিপর্যয় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভালো করে দেখে কারণ খুঁজে বের করবো। আগে গণিতে, ইংরেজিতে একজনও পাস করতো না। আমরা ‘সেকাপে’ প্রকল্পের মাধ্যমে আলাদা শিক্ষক দিয়ে আলাদা ক্লাস করিয়েছি। আস্তে আস্তে সবাই তারা পাস করছে। একটা দিকে বাড়াতে গেলে আরেকটা দিকে চাপ পড়ে।’ মানবিকের ফল বিপর্যয় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এটা বলা কঠিন। পরে মূল্যায়ন করে দেখবো। তুলনামূলকভাবে মেধাবীরা বিজ্ঞানে পড়াশোনা করছে। বিজ্ঞানে জোর দেওয়া যুক্তিযুক্ত। পাশাপাশি অন্যদিকে জোর দিতে হবে। ’বিজ্ঞানসহ সামগ্রিক ফলাফল খারাপের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আগেই বলেছি, শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, পাসের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাসের হার কিছুটা কমেছে। ’ তিনি বলেন, ‘সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে। আমরা সেই পর্যায়ে পৌঁছে গেছি, যেখানে আমাদের মানের বিষয়টি দেখতে হবে। দেখছিও তাই। এবারই প্রথম বাংলাদেশ গণিত অল্পিয়ার্ডে দুজনে গোল্ড মেলে পেয়েছে। এটি অবিশ্বাস্য সাফল্য আমাদের। দেখা যাচ্ছে অনেক উন্নত দেশ, যেমন ভারত— তাদেরও পেছনে ফেলে গোল্ড মেলে নিয়ে আসছে।’