বিশ্বম্ভরপুরের কৃষকদের আহাজারি খরচার হাওরে ফসলহানি
স্বপন কুমার বর্মন-
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিন জিরাগ তাহিরপুর বাঁধ ভেঙে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বৃহৎ খরচার হাওরে পানি প্রবেশ করে কৃষকের হাজার হাজার একর বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। হাওরপাড়ের কৃষকের মাঝে কান্না আর আহাজারিতে আকাশ ভারী হয়ে ওঠছে। গতকাল রবিবার (০২ এপ্রিল) সকাল থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিন জিরাগ তাহিরপুর গ্রামের উত্তরে জিরাগ তাহিরপুর বাঁধ কিছু ভেঙে পানি প্রবেশ করছিল। এরপরও পিআইসির প্রকল্প চেয়ারম্যান মো. নেছার মিয়া ও পাউবো’র কোন লোকজন বাঁধ রক্ষার ব্যাপারে কোন চেষ্টা করেনি বলে স্থানীয় কৃষকরা জানান। দুপুর থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানার নেতৃত্বে বাঁধ রক্ষার ব্যাপারে চেষ্টা করা হয়। বিকেলে বাঁধটি বড় আকারে ভেঙে পানি প্রবল বেগে প্রবেশ করলে হাওরের বোরো ফসল তলিয়ে যেতে থাকে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ( রবিবার সন্ধ্যা) উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদসহ স্থানীয় কৃষক আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা অব্যাহত ছিল। কিন্তু পানির প্রবল বেগ থাকায় তাসম্ভব হয়ে ওঠছে না।
উল্লেখ্য, ফসল রক্ষার বাঁধগুলো রক্ষার কাজ শুরু থেকে পাউবো’র ও পিআইসিদের অবহেলা, উদাসীনতা ও অনিয়ম-দুর্নীতির ফলেই ফসল রক্ষার বাঁধ ভেঙে কৃষকের সোনার ফসল অকালে তলিয়ে সর্বনাশ হয়েছে বলে মনে করেন কৃষকরা। খরচার হাওরপাড়ের কৃষকদের মাঝে এখন শুধুই কান্না আর আহাজারি।রাধানগর গ্রামের মো. কাহিন মিয়া ১১ বিঘা বোরো জমি চাষাবাদ করেছিলের। বাঁধ ভেঙে সবটুকুই তলিয়ে গেছে। কৃষ্ণনগর গ্রামের কাজল বর্মণের ২২ বিঘা সবটুকুই তলিয়ে গেছে। এভাবে শত শত কৃষকের জমি অকালে তলিয়ে গিয়ে একমুঠু ধানও ঘরে তোলার আর কোন সুযোগ নেই।
গতকাল রবিবার (০২ এপ্রিল) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাঁধগুলোতে পাউবো’র লোকজনকে দেখা যায়নি। সারাদিনই ছিল হাওরের বাঁধগুলো অরক্ষিত। খরচার হাওরে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার হেক্টরের অধিক জমি তলিয়ে গেছে। পানি দ্রুত প্রবেশ করায় ক্ষতির পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাউবো’র উদাসীনতা ও অনিয়ম-দুর্নীতির সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাশাপাশি কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেবার জন্য এলাকায় কৃষক-জনতার দাবি উঠছে।