বার্তা ডেস্ক :: রক্ষণশীল দেশ হিসেবে পরিচিত সৌদি আরব থেকে একদিনেই এক হাজার নারী দেশ ছেড়েছেন। তবে কোনো নিপীড়ন বা বিরক্ত হয়ে নয়, পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ পেয়ে ঘুরতে গিয়েছেন তারা। সৌদি আরবের প্রভাবশালী গণমাধ্যম আল-আরাবিয়ার খবরে বলা হয়, এতদিন সৌদি নারীরা অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়া অন্য কোনো দেশে যাতায়াত করতে পারতেন না। এমনকি সৌদি আরবের ভেতরেও অবাধ যাতায়াত, কেনাকাটা বা খেলাধুলাসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারতেন না। গত ২ আগস্ট থেকে আইনটি পরিবর্তন করে সৌদি সরকার। এরপর থেকেই পুরুষ অভিবাবক ছাড়াই সৌদি নারীরা নিজেদের মতো বিদেশ ভ্রমণ শুরু করেছেন। আল-আরাবিয়া জানায়, ১৯ আগস্ট একদিনেই সৌদি আরব থেকে এক হাজার নারী তাদের পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিদেশ ভ্রমণে গিয়েছেন। এটিকে সৌদি আরবের ইতিহাসে ব্যতিক্রমী ও ঐতিহাসিক ঘটনা বলছেন দেশটির নীতিনির্ধারকরা।
সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় প্রদেশ ‘আশ-শারকিয়্যাহ’ থেকে এ বিরল ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানবন্দরে পুরুষ অভিভাবকের অনুমতির কাগজ দেখানো ছাড়াই একহাজার নারী সৌদি আরব ছাড়ার ঘটনায় ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারাও বিস্মিত হয়েছেন। বিশালসংখ্যক এ নারী কোন দেশে কী উদ্দেশে ভ্রমণে বেরিয়েছে, সে বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ কিছু না জানালেও বিষয়টিকে ঐতিহাসিক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তারা। গত ২ আগস্ট সৌদি সরকার এক রাজকীয় ফরমানে বলা হয়েছে, এখন থেকে সৌদি আরবের নারীরা কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই দেশের বাইরে ভ্রমণ করতে পারবেন। নতুন ঘোষিত এ আইনে বলা হয়েছে, ২১ বছরের বেশি বয়সী যেকোনো নারী এখন থেকে কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমোদন ছাড়াই পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ আইনের ফলে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সৌদি নারীরা পুরুষের সমকক্ষ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই আইন কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত পাসপোর্ট বানানোসহ দেশের বাইরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সৌদি নারীদের জন্য স্বামী, পিতা বা যেকোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক ছিল। রাজকীয় ওই ফরমানে শুধু ভ্রমণ বিষয়েই নারীদের স্বাধীনতা দেয়া হয়নি, আরও বেশ কয়েকটি বিষয়েও অধিকার দেয়া হয়েছে তাদের। ফরমানে আরও বলা হয়েছে, এখন থেকে নারীরা তাদের শিশুর জন্মের নিবন্ধন করাতে পারবেন। এ ছাড়া নিজেরা বিয়ে করা বা বিয়ে বিচ্ছেদের অনুমোদন দিতে পারবেন। নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়ানো হয়েছে ওই ফরমানে। সৌজন্যে : যুগান্তর

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn