অনলাইনে ৩টি সরকারি সেবার যাত্রা শুরু
অনলাইনে সরকারি সেবাপ্রাপ্তি, বিল পরিশোধ ও গ্রামীণ উৎপাদনকারীর পণ্য শহরের ক্রেতার হাতে পৌঁছে দিতে ডিজিটাল মিউনিসিপালিটি সার্ভিসেস সিস্টেম ‘একপে’, ‘একসেবা’ ও ‘একশপ’-এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে নতুন সরকারি সেবা এবং ই-গভর্নমেন্ট মাস্টার প্ল্যান রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এসব সেবা পরীক্ষামূলকভাবে ১০টি মিউনিসিপ্যাল অঞ্চলে (সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা) শুরু করা হয়েছে। ৩২৯টি মিউনিসিপ্যাল অঞ্চলকে এর আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। আইসিটি বিভাগের এটুআই প্রকল্পের আওতায় আপাতত ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এবং ৯টি পৌরসভায় এসব নাগরিক সেবা পাওয়া যাবে। পরে তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে সারা দেশে। ডিজিটাল অটোমেশন পদ্ধতিতে নাগরিক সেবার এই কার্যক্রম চালু হওয়ায় ওই ১০ এলাকার অধিবাসীরা অনলাইনে পৌরসভা/সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন সেবা পাওয়ার পাশাপাশি হোল্ডিং ট্যাক্স ও বিভিন্ন সরকারি সেবার বিল দিতে পারবেন। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন ছাড়াও ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নাটোর, ঝিনাইদহ, টুঙ্গিপাড়া, পীরগঞ্জ, সিংড়া, তারাব ও রামগতি পৌরসভায় আপাতত এ কর্মসূচি চলবে।
অনুষ্ঠানে ই-গভর্ন্যান্সের জাতিসংঘ ইনডেক্সে আগামী পাঁচ বছরে ৫০ ধাপ এগোনোর লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ইনডেক্সে বর্তমানে ১১৫ নম্বরে আছে বাংলাদেশ। উপদেষ্টা বলেন, ‘ই-গভর্ন্যান্সের জাতীয় ইনডেক্সে আমরা এখন ১১৫ নম্বরে আছি। আগামী পাঁচ বছরে আমরা আরও ৫০ ধাপ উন্নতি করে দুই অঙ্কের সংখ্যায় আসব, এমন লক্ষ্যমাত্রা আমাদের। ১০ বছর আগে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলাম। তখন অনেকেই বুঝতে পারেনি যে ডিজিটাল বাংলাদেশ কী? তবে অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা তাদের ভুল প্রমাণ করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। আজ যা দেখছেন, তা ডিজিটাল বাংলাদেশের সামান্য কিছু। আরও অনেক কিছু আমরা করেছি এবং সামনে করব।’ সরকারি সেবা চালু সম্পর্কে জয় বলেন, পাইলট প্রকল্প দিয়ে প্রায় ২০ লাখ নাগরিককে সেবা দেওয়া হবে। ২০২০ সালের মধ্যে ৩০০ পৌরসভায় সেবা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এখানে আরও ডিজিটাল সার্ভিস অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ২০২১ সালের মাঝে দেশের অধিকাংশ নাগরিক অধিকাংশ সেবা হয় তাদের হাতের ছোঁয়ার মাধ্যমেই পাবে, আর নয়তো আমাদের ইউনিয়ন ডিজিটাল সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে নিজেদের দোরগোড়ায় পাবে।
ডিজিটাল সেবাগুলো সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, ই-গভর্ন্যান্স ব্যবস্থায় এগিয়ে যেতে হলে দরকার সময় এবং অর্থের ব্যয় কমিয়ে আনা। তার জন্যই এক্সেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) উদ্যোগে আমরা করেছি একশপ, একপে ও একসেবা। একসেবায় এখন পর্যন্ত ১৬২টি সরকারি সেবা আছে। নাগরিকদের ভিন্ন ভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বা ভিন্ন ভিন্ন ওয়েবসাইটেও যেতে হবে না। এখান থেকেই এসব সেবা পাবেন। পর্যায়ক্রমে এতে আরও তিন হাজার সেবা অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য আছে আমাদের। একপের মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন ইউটিলিটি সেবার বিল ও অন্যান্য ফি এক জায়গা থেকেই দেওয়া যাবে। আর একশপের মাধ্যমে দেশের আনাচকানাচ থেকে পণ্য উৎপাদক বা উদ্যোক্তারা ই-কমার্সে তাঁদের পণ্য বিক্রি করতে পারবেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, গেস্ট অব অনার হিসেবে ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত হু ক্যাং ইল।