অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সিলেটের পরিদর্শক গোবিন্দ শুক্ল বরখাস্ত
বার্তা ডেস্ক :: সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) সাবেক আরওআই পুলিশ পরিদর্শক গোবিন্দ শুক্ল দাসকে (বিপি-৭১৮৯০৫১৭২৮) বরখাস্ত করেছেন আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। গত ৭ অক্টোবর এক আদেশে বিভাগীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্য, জনসমক্ষে পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা, অনৈতিক কর্মকাণ্ড, চরম নৈতিক স্খলন ও অসদাচরণের দায়ে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ১২(১) মোতাবেক তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন আইজিপি। আদেশে আরো বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি রংপুর রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং প্রচলিত বিধি মোতাবেক খোরাকি ভাতা প্রাপ্য হবেন। এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর ‘কনস্টেবল আশরাফুলের মৃত্যু; পুলিশ দুর্ঘটনা বললেও স্বজনরা বলছেন হত্যা। মোবাইল ফোনে আরওআইয়ের সঙ্গে স্ত্রীর অনৈতিক সম্পর্কের ভিডিও’ শিরোনামে গণমাধ্যমে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপা হয়। এর পরই নড়েচড়ে বসে এসএমপি পুলিশ। সেদিনই আশরাফুলের সড়ক দুর্ঘটনার মামলা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর এসএমপির এক নারী কনস্টেবলের সঙ্গে রিজার্ভ অফিস ইন্সপেক্টর (আরওআই) গোবিন্দ শুক্ল দাসের অনৈতিক সম্পর্কের ভিডিওর সত্যতা পেয়ে দুজনকে ক্লোজড করা হয়েছে। এসএমপি কমিশনার গোলাম কিবরিয়া আরওআই গোবিন্দ শুক্ল দাসকে ও এসএমপির তৎকালীন উপকমিশনার (সদর ও প্রশাসন) মো. কামরুল আমিন ওই নারী কনস্টেবলকে ক্লোজড করেন। তখন এসএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) জেদান আল মুসা যুগান্তরকে বলেছিলেন, নৈতিক স্খলনের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় দুজনকে ক্লোজড করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর ১২ দিন পরই বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এসএমপির সাবেক রিজার্ভ অফিস ইন্সপেক্টর গোবিন্দ শুক্ল দাসকে বরখাস্ত করেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুন রাতে কনস্টেবল আশরাফুলের কথিত স্ত্রী এসএমপির এক নারী কনস্টেবলের সঙ্গে আরওআই গোবিন্দ শুল্ক দাসের অনৈতিক সম্পর্কের অশ্লীল ভিডিও ধারণ করেন আশরাফুল নিজেই। পরে আরওআই গোবিন্দ শুক্ল দাসকে বেধড়ক মারধর করেন আশরাফুল। সেই ভিডিও থেকে যায় তার মোবাইলে। গত ১৮ আগস্ট গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে সিলেটে কর্মস্থলে ফেরার পথে হবিগঞ্জের বাহুবলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান আশরাফুল। কিন্তু তার শরীরে কোনো আঘাত না থাকায় সন্দেহ হয় পরিবারের। পরে হাইওয়ে পুলিশ আশরাফুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি তার পরিবারের কাছে ফেরত দেয়। সেই মোবাইলে থাকা তিনটি ভিডিও ক্লিপ আশরাফুলের মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনা না হত্যা- এ নিয়ে সন্দেহ হয় পরিবারের কাছে। আশরাফুলের বড় ভাই মনিরুল ইসলাম এবং তার চাচাতো ভাই শফিকুল ইসলাম গত ৪ সেপ্টেম্বর সিলেটে এসে তিনটি ভিডিও ক্লিপ এসএমপি পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়ার হাতে তুলে দেন এবং তাদের সন্দেহের কথা জানান। রহস্যজনক কারণে দুই পুলিশ সদস্যের নৈতিক স্খলনের ভিডিও হাতে পেয়েও ১০ দিনে কোনো ব্যবস্থা নেননি এসএমপি কমিশনার। সৌজন্যে : যুগান্তর