ছবিটি এখন শুধুই স্মৃতি
গত রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টি সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা যান জান্নাতুল। আর তার স্বামী শহিদুল কিরমানীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রোববার সকালে নেয়া হয় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যান শহিদুলও। শহিদুলের বাবা একেএম শহীদুল্লাহ বলেন, তার দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে শহিদুল বড়। দিলু রোডের ওই বাসার তিন তলায় থাকতেন পরিবার নিয়ে। তাদের গ্রামের বাড়ি নরসিংদি জেলার শিবপুর উপজেলায়। বিআইভিপি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ছিলেন তিনি। পাশাপাশি আইসিএমএ নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রভাষক হিসেবেও কাজ করতেন। তার স্ত্রী জান্নাত বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এ হিসাবরক্ষক ছিলেন। শহীদুল কিরমানির মামাতো বোন শেখ রেশমী বলেন, পুরো পরিবারটাই শেষ হয়ে গেল। এই ঘা শুকানোর মতো না। আজীবন এই ঘা আমাদের বয়ে চলতে হবে। তিনি বলেন, ভাইয়া (শহীদুল কিরমানি) জানতেন তার শিশু সন্তান রুশিদি মারা গেছে। তার স্ত্রীও নেই। তিনিও মারা যাবেন। ভাবি (জান্নাতুল ফেরদৌসী) যখন মারা যান তখন ভাইয়া লাইফ সাপোর্টে। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর না জানলেও ঘটনার পরপরই হাসপাতালে শুয়ে আঁচ করতে পেরেছিলেন রুশদি আর নেই। ভাইয়া হাসপাতালে নিজেই বলছিলেন- রুশদি তো নেই আমি জানি। তোমার ভাবিও মারা যাবে, আমিও হয়তো বাঁচবো না। ভাইয়া বুঝতে পেরেছিলেন যে, একে একে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। ‘এই কষ্ট সহ্য করার মতো না। পুরো পরিবার শেষ গেলো, এই ঘা কখনই শুকাবে না।’ বড় বোন নাসরিন বলেন, স্ত্রী জান্নাত ও ছেলে রুশদির কবরের পাশেই গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ইটনা গ্রামে শহীদুল কারমানির মরদেহ গতকাল বাদ আছর দাফন করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিদায় দিয়ে আসলাম। ভাইয়ের হাসিমাখা মুখ আর দেখতে পারবো না। যে স্মৃতি ভাই দিয়ে গেলেন, জীবনভর সেই স্মৃতি বয়ে বেড়াবো।