পুনরায় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠাই ছিল খুনীদের প্রধান উদ্দেশ্য: এমপি মানিক
ছাতক :: সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক বলেছেন, পচাত্তুরের ১৫-ই আগস্ট এবং ২০০৪ সালের ২১-শে আগস্ট এর লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য একই। নৃশংস বর্বরোচিত এই দুটি হামলার প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো পাকিস্তানের আদলে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করা। তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি অপশক্তি ও একাত্তরের পরাজিত শক্তি যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি এবং যারা বঙ্গবন্ধুকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছিল তারাই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। একইভাবে ২০০৪ সালেও যারা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছিল তারাই তাকে চিরতরে সরিয়ে দেয়ার লক্ষ্যে এবং আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূণ্য করার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করেছিল। ২১ আগস্টের হত্যাকান্ডের মুল কুশীলব, মুল পরিকল্পনাকারী এবং পরিচালনাকারী জিয়াউর রহমানের পুত্র তারেক রহমান, অর্থাৎ দুই হত্যাকাণ্ডেই একই পরিবার যুক্ত এবং আজকে এই কথাগুলো দিবালোকের মতো সত্য এবং স্পষ্ট।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের ইপসুইচ এন্ড সাফোক আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ভার্চুয়াল শোক সভায় মঙ্গলবার (২৫-আগস্ট) মিটিং ঝুম আপসের মাধ্যমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ এর সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক আহমেদ আবুল লেইসের সঞ্চালনায় এতে প্রধান আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামিলীগের সভাপতি,সুলতান মাহমুদ শরীফ। প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক, সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ বক্তার বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক নঈম উদ্দিন রিয়াজ, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার আবুল কালাম চৌধুরী, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক এস এম সুজন, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক সারব আলী, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ সুরুক আলী, সহ দপ্তর সম্পাদক লুৎফুর রহমান সায়াদ, কভেন্ট্রি আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মকদ্দুছ আলী, সাধারন সম্পাদক রুহুল আমিন, যুক্তরাজ্য আওয়ামী যুবলীগের সাংগটনিক সম্পাদক বাবুল খান, যুক্তরাজ্য তাঁতী লীগের সভাপতি আবদুস সালাম প্রমুখ। এতে আরো অংশ গ্রহণ করেন ইপসুইচ এন্ড সাফোক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ গোলাম রব্বানী, ইপসুইচ এন্ড সাফোক আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ফয়েজ আহমদ, সহ সভাপতি আবদুর রহিম, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আব্দুল বাছিত লিমন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আলী হোসেন, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আব্দুল হামিদ, কোষাধক্ষ্য আব্দুল বাতিন সহ নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর স্বাধীনতাবিরোধীরা এ দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পুনর্বাসিত হতে থাকে। তারা এ দেশের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে নানা পাঁয়তারা করে। শাসকদের রোষানলে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণও যেন নিষিদ্ধ হয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ঠেকাতে কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ জারি করেছিল মোশতাক সরকার। দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসীন হলে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ উন্মুক্ত করা হয়। বিচার শুরু হয় ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির ললাটে যে কলঙ্কতিলক পরিয়ে দেয়া হয়েছিল, ৩৫ বছরেরও বেশি সময় পর ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি সেই কলঙ্ক থেকে জাতির মুক্তি ঘটে। বঙ্গবন্ধু হত্যার চূড়ান্ত বিচারের রায় অনুযায়ী ওই দিন মধ্যরাতের পর পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তবে বিভিন্ন দেশে পলাতক থাকায় আরও কয়েকজন খুনির সাজা এখনও কার্যকর করা যায়নি।