সিলেট :: সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ২০১১ সালের নভেম্বরে গঠিত কমিটিতে সভাপতি হয়েছিলেন আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান। বর্ষিয়ান এই নেতা মারা যান ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। এরপর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান এডভোকেট লুৎফুর রহমান। এরপর তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও লাভ করেন। কিন্তু বয়োবৃদ্ধ লুৎফুর দলের কর্মকাণ্ডে ততোটা সময় দিতে পারতেন না।  জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইফতেখার হোসেন শামীম প্রয়াত। সহসভাপতি পদে থাকা ইমরান আহমদ সিলেট-৪ আসনের সাংসদ ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী, মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস সিলেট-৩ আসনের সাংসদ; আরেক সহসভাপতি আশফাক আহমদ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। জনপ্রতিনিধি হওয়ায় তারাও দলীয় কর্মকান্ডে খুব বেশি সময় দিতে পারেন না। এরকম অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগকে প্রায় একাই সামাল দিচ্ছিলেন, এরকম অভিমত দলটির নেতাকর্মীদের। তাদের ধারণা ছিল বিগত সম্মেলনেও শফিক চৌধুরীকে সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদে দেখা যাবে। কিন্তু সেটি হয়নি, গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদের কোনটিতেই ছিলো না শফিক চৌধুরীর নাম।
প্রবাস থেকে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ওঠে আসা শফিকুর রহমান চৌধুরীর খ্যাতি রয়েছে কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে। যেকোনো নেতাকর্মী ডাকলেই তাঁকে কাছে পায় এমন খ্যাতিও রয়েছে। কিন্তু সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ঘোষিত নামে শফিকুর রহমান চৌধুরীর না থাকায় বিস্মিত হন নেতাকর্মীরা।  ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে বিএনপির প্রভাবশালী প্রার্থী ইলিয়াস আলীকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সাংসদ হয়েছিলেন শফিকুর রহমান চৌধুরী। এরপর ২০১১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে একা কাঁধেই তুলে নেন দায়িত্ব। সিলেটজুড়ে দলীয় কর্মসূচি পালন, তৃণমূল নেতাকর্মীদের সক্রিয় ও সংগঠিত রাখা, বিপদে-আপদে নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানো সবক্ষেত্রেই অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন শফিক। এছাড়া দলের যে কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়নে সবার অগ্রভাগে থাকতেন তিনি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েও তিনি দলের নির্দেশে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেন নিজের আসন। এরপর আরো মনোনিবেশ করেন রাজনীতিতে। পুরো সময় রাজনীতিতে ব্যয় করে ‘২৪ ঘন্টার রাজনীতিবিদ’ হিসেবে খ্যাতি পান সিলেটে। কিন্তু বিগত সম্মেলনে নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। সম্মেলন শেষে সিলেট ত্যাগের সময় শফিক চৌধুরীকে সিনিয়র সহ সভাপতি করে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু এবার শফিক চৌধুরীর এই পদ প্রাপ্তি নিয়েও অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির যে তালিকা জমা দেয়া হয়েছে সেটিতে সিনিয়র সহ সভাপতি হিসেবে শফিক চৌধুরীর সাথে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েসের নাম রাখা হয়েছে। তাই এখনো নেতাকর্মীরা বুঝে উঠতে পারছেন না দীর্ঘদিনের ত্যাগের মুল্যায়ন শফিক চৌধুরী এবারো পাবেন কি না?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn