লীগ কমিটির সিদ্ধান্তে হতাশ ফুটবলাররা
পেশাদার লীগ কমিটির সঙ্গে সভায় বসে ফুটবলাররা আগেই তাদের পারিশ্রমিকে ছাড় দিয়ে রেখেছিলেন। গত মৌসুমের পুরো পারিশ্রমিকের সঙ্গে তাদের দাবি ছিল নতুন চুক্তির ৫০ শতাংশ। কিন্তু বৃহস্পতিবার লীগ কমিটির সভায় খেলোয়াড়দের দাবি মানা হয়নি। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগের মৌসুমের চুক্তি অনুযায়ী নতুন মৌসুমে পারিশ্রমিকের মাত্র ২৫ শতাংশ দেওয়া হবে। এ খবর জেনে খেলোয়াড়েরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ বলছেন নির্বাচনের আগে ক্লাবগুলোকে খুশি করতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাফুফের পেশাদার লীগ কমিটি। মৌসুম শুরুর দাবি নিয়ে বেশ কয়েকবার বাফুফে সভাপতির সঙ্গে দেখা করেছেন ফুটবলাররা। লীগ কমিটির সঙ্গেও সভা করেছেন তারা। ছাড় দিয়ে হলেও ফুটবল মাঠে গড়াক এমন দাবিই করে আসছিলেন ফুটবলাররা।
লীগ কমিটির চাপিয়ে দেয়া এই সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মানতে পারছে না তারা। জাতীয় দল ও শেখ রাসেলের গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম রানা বলেন, ‘এটা হাস্যকর সিদ্ধান্ত। এটা কোন হিসেব অনুযায়ী হয়েছে, বোধগম্য হচ্ছে না। আমার মনে হয় এটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছাড়া কিছু নয়। এতদিন তাহলে তাদের সঙ্গে সভা করে কী হলো? এতে কোনওভাবেই খেলোয়াড়দের স্বার্থ রক্ষা হয়নি।’ আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফেডারেশন কাপ দিয়ে ফুটবল মৌসুম শুরু হবে। এর আগে অক্টোবরে হতে পারে দলবদল। সেখানে নতুন চুক্তির আগে পরিত্যক্ত মৌসুমের ৪৫ ভাগ অর্থ পাবেন খেলোয়াড়েরা। এ প্রসঙ্গে রানা বলেন, ‘খেলা শুরুর আগে আগের পারিশ্রমিকের পুরোটা পেলে ভালো হতো। এখন খেলোয়াড়দের চলাই কঠিন হয়ে পড়বে। তারপরও আশার কথা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে খেলা শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর আমরা পারিশ্রমিক যা-ই পাই না কেন,আমাদের তো খেলতেই হবে।’ জাতীয় দল ও গত প্রিমিয়ার লীগের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার তপু বর্মণ বলেন, ‘আমার কাছে এটা হতাশাজনক খবর। এখানে আমাদের দিকটি বিবেচনা করা হয়নি। আমি খবরটা শুনে হতভম্ব হয়ে পড়েছি। আমরা তো আগেই পারিশ্রমিকে ছাড় দিয়েছি। সেই ছাড়েরও অর্ধেক পেতে হবে এখন!’ সিদ্ধান্ত না মেনে ফুটবলারদের উপায় নেই। তবে এটি ফুটবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, সেটি নিয়ে শঙ্কিত তপু, ‘পারিশ্রমিকের এই অবস্থা হলে অনেক সময় অনেক খেলোয়াড় তার নিজের সেরাটা দেবে কিনা সংশয় থাকে। তারপরেও আমরা চাই ফুটবল মৌসুম শুরু হোক। অন্তত মাঠে তো খেলা থাকবে।’ তপুর মতো অনেক ফুটবলার ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিকের মৌসুমে ফুটবলটা জমবে না বলেই মনে করছেন। অনেকে আবার দাবি করছেন ক্লাবগুলোকে খুশি করতেই বাফুফে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাবেক জাতীয় ফুটবলার আমিনুল হক বলেন, ‘সামনে নির্বাচন. এই নির্বাচনে কিন্তু ক্লাবগুলো ভোটার। ফুটবলারদের কোনো প্রতিনিধি নেই এই নির্বাচনে। এ কারণেই ফুটবলারদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভোট পেতে ফুটবলারদের ঠকানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এখানে একটিবারও ফুটবলারদের স্বার্থের কথা ভাবা হয়নি। তারা ভাবেনি, ফুটবলাররা ২৫ শতাংশ অর্থ দিয়ে সারা বছর কিভাবে চলবে।