বার্তা ডেস্ক: প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা ধরনের চড়াই-উতরাই কিংবা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে পথ চলছে একমাত্র রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। একুশ শতকের আগে পর্যন্ত এককভাবে বিনোদনপিয়াসীদের চাহিদা পূরণ করেছে এ টিভি চ্যানেলটি। পরে বেসরকারি চ্যানেলগুলো সম্প্রচারে আসার পর প্রতিযোগিতায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে রাষ্ট্রীয় এ চ্যানেলটি। দর্শকের বেশিরভাগই বেসরকারি টিভি চ্যানেলমুখী হয়ে পড়ে। এ প্রেক্ষিতে সাধারণ দর্শকদের আবারও বিটিভিমুখী করার জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিটিভির উন্নয়নে মনোযোগ দেয়া হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এরই মধ্যে এ চ্যানেলটি এনালগ থেকে ডিজিটালে রূপান্তরিত হয়েছে। এছাড়া চ্যানেলটির অভ্যন্তরে অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেমন সেন্ট্রাল সিস্টেম ডিজিটাল করা হয়েছে। আগে প্রান্তিকের অনুষ্ঠান নির্ধারণ করা ছিল না, এখন সেটি নির্ধারণ করা থাকে। নতুন দুটি স্টুডিও তৈরি করা হয়েছে। বসেছে ডিজিটাল এডিটিং প্যানেল। চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকে ১২ ঘণ্টা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়, যেটি শিগগিরই ১৮ ঘণ্টায় উন্নীত হবে। এছাড়া সেখানেও নতুন স্টুডিও স্থাপিত হচ্ছে। এখন সারা বিশ্বে বিটিভি দেখতে পাচ্ছেন দর্শক। সবার আগে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার শুরু করে চ্যানেলটি। দর্শনার্থীর প্রবেশে ইলেকট্রনিক পাস সিস্টেম প্রবর্তন করা হয়েছে। এছাড়া সম্মানী দেয়া হচ্ছে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। আগে লাইভ অনুষ্ঠান ছিল না, এখন সেটি নিয়মিত হচ্ছে। একটি মিউজিয়ামের পাশাপাশি কম্পিউটার ল্যাব ও আধুনিক ট্রেনিং হল তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকা অডিশন আবার চালু হয়েছে। অভিনয়শিল্পীদের অডিশন পর্ব এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গানের শিল্পীদের অডিশন এখন শেষ পর্যায়ে আছে। যেসব অভিজ্ঞ ও বয়স্ক শিল্পী বিটিভি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তাদের আবার বিটিভিমুখী করা হয়েছে। পাশাপাশি শিল্পী সম্মানী আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি করা হয়েছে।

সম্প্রতি জনপ্রিয় নির্মাতা ও শিল্পীদের সমন্বয়ে চারটি দীর্ঘ ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ শুরু করেছে চ্যানেলটি। এছাড়া প্রথমবার চ্যানেলটির অর্থায়নে দুটি শর্টফিল্মও নির্মাণ করা হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিটিভির হারানো দিনের গৌরব ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে প্রবলভাবে। শিল্পী, কলাকুশলীরাও এখন বিটিভির অনুষ্ঠান কিংবা নাটকে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তাছাড়া সময়োপযোগী বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে বিটিভির পর্দায়। পাশাপাশি মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান নির্মাণ করে যাচ্ছে চ্যানেলটি। পুরো চ্যানেলের কর্মকাণ্ড নিয়ে এর মহাপরিচালক হারুন-অর-রশীদ যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এখানে দায়িত্ব পালন করছি। আমার যোগদানের সময় থেকেই উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করি। এক্ষেত্রে অনেকের সহযোগিতা পেয়েছি। বিশেষ করে সরকার থেকে ব্যাপক সহযোগিতা করা হয়েছে। যে জায়গায় যা প্রয়োজন তাই করার চেষ্টা করেছি। পিছিয়ে পড়া এ চ্যানেলটি এখন আবার দর্শকের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এছাড়া আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা দিয়ে অনুষ্ঠান, নাটক, গানের অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য বিষয়কে দর্শকের সামনে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে বিটিভির দর্শক সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এভাবে উন্নয়ন চলতে থাকলে দেশের পাশাপাশি বহির্বিশ্বেও বিটিভি সমাদৃত হবে।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn