সুনামগঞ্জে লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার, বাড়ছে সাধারণের নাভি:শ্বাস
শহীদনূর আহমেদ :: জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে শিগগিরই মানুষের দুর্ভোগ কমার কোনও লক্ষণ নেই। নানা অজুহাতে গত দুই সপ্তাহের ধরে সুনামগঞ্জের নিত্যপণ্যের বাজারে দাম সাধারণের ক্রয়ক্ষমতায় বাহিরে। বন্যা পরবর্তি করোনা প্রার্দুভাবের সময় দৈনন্দিন ভোগ্য পন্যের দাম এভাবে বাড়তে থাকলে সাধারণের নাভি:শ্বাস বাড়বে বৈকি কমবে না। বাজারে নিয়ন্ত্রণে এখনই প্রদক্ষেপ না নিলেও হাওরের জনপদ সুনামগঞ্জে জনদুর্ভোগ মহামারি আকার ধারণ করবে বলে জানিয়েছেন সাধারণ ভোক্তারা। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর জেলার বাজার গুলোতে অভিযান চালানোর পরও প্রতি কেজি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়। সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করলেও সুনামগঞ্জের বাজারে প্রতিকেজি আলু বিক্রি করা হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। গ্রামীণ বাজারের অবস্থা আরও খারাপ। খুচরা বাজারে দিন দিন বাড়তে চালের দাম। প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৮-৫০ টাকা, মাঝারি চাল ৫২-৫৫ টাকায় এবং সরু চাল ৫৮-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজি বাজারের অবস্থা আরও করুণ। ১০০ টাকার মধ্যে মিলছে না মানসম্মত সবজি। এ যেনো মূল্যবৃদ্ধির লাগামহীন প্রতিযোগিতা। প্রতি কেজি শিমের দাম ১৬০ টাকা, টমোটো বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০টাকায়। ফুলকপি ১২০-১৩০ টাকা, বেগুন ১০০-১১০ টাকা, মুলা ৯০-১০০ টাকা, গাজরের কেজি ১০০ টাকা। ৫০- ৬০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হচ্ছে মাঝারি ধরণের কিছু সবজি।
লতার আটি-৬০ টাকা, লাউ প্রতি পিচ ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০-৪৫ টাকা, জলপাই ৪০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, সিসিন্দা ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, মাঝারি ধরনে লেবুর পিচ ৩০ টাকা, কচুর পিচ-২০ টাকা ও ডাটা শাখের আঁটি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বাজারে মাংস, ডিম ও মাছের দাম উর্ধ্বমূখী। নিত্যপন্যের বেপরোয়া মূল্যে নাস্তানাবুধ তৃণমূলের মানুষ। করোনা প্রার্দুভাবে আয়-ব্যয়ের হিসেবে দ্রব্যমূল্যের এমন অবস্থায় মরার উপর খাড়া ঘা বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ। আবুল হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, আমি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। মাসে যে বেতন পাই তা দিয়ে সংসারের ব্যয় নির্বাহ করা দায়। করোনা প্রার্দুভাবে দীর্ঘদিন বেতনভাতার বাহিরে ছিলাম। অমন অবস্থায় নিত্যপন্যের দামের উর্ধ্বগতি আমাকে বিপাকে ফেলে দিচ্ছে। আবুল কালাম নামে পৌরসভার এক বাসিন্দা বলেন, বাজারে নিত্যপন্যের দামে আগুন। আলুর কেজি ৪৫ টাকা। ১০০ টাকার নিচে সবচি কেনা যায় না। সাধারণ মানুষ বাঁচবে কি করে। সরকারের উচিৎ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা। বাজার মনিটরিং করে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা। সুনামগঞ্জ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, নিত্যপন্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিনই বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি করায় রবিবার চালবন পয়েন্টে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।