বার্তা ডেক্সঃঃ প্রচার-প্রচারণার সময় হাতে আছে মাত্র ২৪ ঘণ্টা। শেষ মুহূর্তে দুই প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন ছুটছেন ভোটারদের কাছে। ইতিমধ্যে দেশটির ৬৫ শতাংশ ভোটার তাদের রায় দিয়েছেন। কিন্তু ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতির জটিল সমীকরণে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কে হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। বিভিন্ন জনমত জরিপ ডেমোক্রেট প্রার্থী বাইডেনের পক্ষে রায় দিলেও সাধারণ মানুষের আস্থায় নেই এসব জরিপ। এমনকী এবারের নির্বাচনে নজিরবিহীন আগাম ভোট পড়লেও রায় কার পক্ষে গেছে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। এদিকে ট্রাম্পের সমর্থকদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে শনিবার ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্য টেক্সাসে নির্বাচনী সভা বাতিল করেছেন জো বাইডেন। ট্রাম্পের সমর্থকেরা বাইডেনের প্রচার বাসের চারদিকে গাড়ি দিয়ে ঘিরে রেখে গতিরোধ করার চেষ্টা চালিয়েছে। অন্যদিকে ট্রাম্প টুইট করে উচ্ছৃঙ্খল সমর্থকদের এ ঘটনায় সমর্থনও দিয়েছেন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প এই রাজ্যে বিজয়ী হয়েছিলেন।

এবারের নির্বাচনে টেক্সাসে আগাম ভোট দেওয়ার রেকর্ড গত নির্বাচনের মোট ভোটের হিসাবকেও ছাড়িয়ে গেছে। রাজ্যের ৫৭ ভাগ ভোটার আগাম ও ডাকযোগে ভোট প্রদান করেছেন। টেক্সাস রাজ্যের ডেমোক্রেটদের দাবি, রাজ্যের জনগণ পরিবর্তনের পক্ষে রায় দিয়েছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য ট্রিবিউনও এই রাজ্যে ডেমোক্রেটদের বিজয়ী হবার আভাস দিয়েছে। টেক্সাসে ৩৯টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট রয়েছে, যা রাজ্য হিসাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট।

সিএনএন-এর ভোটের হিসাব বলছে, ইলেকটোরাল ভোটে বাইডেন ২৯০টি এবং ট্রাম্প ১৬৩টি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। এছাড়া ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্য ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওয়াইহো ও আইদাহ রাজ্যের ৮৫টি ইলেকটোরাল ভোট ট্রাম্পের ঘরে গেলেও লাভ হবে না। অর্থাৎ ২৭০ ভোট যিনি পাবেন তিনিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। সে হিসাবে বাইডেন বিজয়ী হবেন বলে সিএনএন দাবি করছে। তবে ২০১৬ সালের নির্বাচনে অ্যারিজোনা, পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান ও উইসকনসিন রাজ্যে ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছিলেন। সিএনএন এবার এসব রাজ্যে বাইডেনকে বিজয়ী হিসাবে দেখাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পদ্ধতি জটিল। সারা দেশের ভোটে এগিয়ে থাকলেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইলেকটোরাল কলেজ ভোটে। ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে যিনি ২৭০ ভোট পাবেন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। এই ৫৩৮ ভোটের মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫, সিনেটের ১০০ এবং রাজধানী ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার (ওয়াশিংটন ডিসি) ৩ ভোট। একটি রাজ্যে যিনি সর্বোচ্চ ভোট পাবেন তিনি ওই রাজ্যের সবগুলো ইলেকটোরাল ভোট জিতবেন। যেমন টেক্সাস রাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট ৩৯টি। এই রাজ্যের ভোটাররা প্রেসিডেন্ট হিসাবে যাকে সর্বোচ্চ ভোট দেবেন তিনি ৩৯টি ইলেকটোরাল ভোট পাবেন। এভাবে ৪৮টি স্টেট এবং ওয়াশিংটন ডিসির ৩টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ভাগাভাগি হয়। নেব্রাস্কা ও মেইন রাজ্যের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের হিসাব একেবারেই ভিন্ন ও জটিল। নেব্রাস্কা ও মেইন রাজ্যে যে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সর্বোচ্চ ভোট পাবেন রাজ্যের দুটি করে ইলেকটোরাল ভোট তার পক্ষে যাবে। বাকী ৫টি ভোট কংগ্রেশনাল আসনভিত্তিক বিজয়ী পক্ষে যায়। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন সারা দেশে ৩০ লাখ ভোট বেশি পেয়েও শুধুমাত্র ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতির কাছে হেরে যান। এই পদ্ধতি গণতান্ত্রিক নয় বলে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক সমালোচিত।সূত্র : ইত্তেফাক

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn