নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, নাস্তিকদের জন্য আমার চোখের ইশারাই যথেষ্ট। কিন্তু আমি নারায়ণগঞ্জে একটি নজির স্থাপন করতে চাই। যারা ধর্মের সমালোচনার নামে কটূক্তি করে তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে নিয়ে আমি এক মঞ্চে প্রতিবাদ করতে চাই। তাদের প্রতি ঘৃণা প্রদর্শন করতে চাই। নারায়ণগঞ্জের মাসদাইরে বুধবার সন্ধ্যায় সিটি কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় মসজিদে স্থানীয় আলেম-ওলামাদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় শামীম ওসমান আক্ষেপের সুরে বলেন, নারায়ণগঞ্জের মতো একটা শহরের প্রধান প্রাণকেন্দ্র শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে রফিউর রাব্বি ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ নিয়ে, ইসলাম ধর্ম নিয়ে এত বড় কথা বলে, তবুও কেউ প্রতিবাদ করল না। প্রতিবাদ করার মতো একটা মানুষও খুঁজে পাওয়া গেল না। এই নারায়ণগঞ্জে কেউ যদি ইসলাম ধর্মকে নিয়ে কটূক্তি করে তবে তার আর কোনো ছাড় নেই।

শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, দেশের কোথাও এটা হতে দেয়া হবে না। ইসলামের খলিফা হজরত ওমরের (রা.) সময়কালে যদি কেউ এ রকম দুঃসাহস দেখাত তবে তরবারি দিয়ে মাথা থেকে গলা আলাদা করে দেয়া হতো। কিন্তু এখন সেই আইন নেই, তাই এদেশের প্রচলিত আইনেই তার (ধর্ম অবমাননাকারীর) বিচার হবে। রফিউর রাব্বির বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, একা হেফাজতের ফেরদৌস মামলা করল, আর দু-একজন কথা বলল, তা ছাড়া কেউ কিছু বলল না।

হেফাজতের ফেরদৌস নয়, একজন মুসলমান হিসেবে ফেরদৌস এ মামলা করেছে। তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ করি এবং শেখ হাসিনার সৈনিক এটা আমার দ্বিতীয় পরিচয়। আমার প্রথম পরিচয় আমি একজন মুসলমান। আর তাই কেউ প্রতিবাদ করুক আর না করুক আমি শুক্রবার জুমার নামাজের পর ডিআইটি মসজিদের সামনে গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রদর্শন করে আসব। আমি মুসলিম হিসেবে আপনাদের দাওয়াত দিতে এসেছি, প্রতিবাদ করা না করা আপনাদের ইচ্ছা।

শামীম ওসমান আরও বলেন, এখানে আমার কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই, আমি আমার ইমানি দায়িত্ব থেকেই এখানে এসেছি। কারণ আমার মৃত্যুর পর যদি আপনারা এখানে এসে আমার জন্য দোয়া করেন যে, এই লোকটা ভালো মানুষ ছিলেন, ধর্মের জন্য মাঠে নেমেছিলেন, আল্লাহ তুমি তার সব গুনাহ ক্ষমা করে দাও, এই দোয়াই হবে আমার পরম পাওয়া। এ সময় তিনি সঠিক পথে আছেন কিনা জিজ্ঞাসা করলে উপস্থিত আলেম ও সাধারণ মানুষ দু’হাত তুলে তাকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, আপনি সঠিক পথেই আছেন।

বুধবার নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতে ইসলামের আমীর মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বাদী হয়ে রফিউর রাব্বির বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে আদালতে মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় শহীদ মিনারে এক অনুষ্ঠানে রফিউর রাব্বি ইসলাম ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বক্তব্য দেন। তিনি বলেছিলেন, ‘যদি বাংলার মানুষ জানত সংবিধান বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম দিয়ে শুরু হবে, দেশ হবে সাম্প্রদায়িকতার দেশ তবে ৩০ লাখের শহীদের মুক্তিযুদ্ধে কেউ অংশ নিত না।’ মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, রাব্বির সেই বক্তব্যে বাদীসহ সারা দেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার শামিল।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn