কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় পানিতে ডুবে ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে বাসার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে মারা গেছেন বড় বোন। সোমবার উপজেলার পৌর এলাকায় চণ্ডীবের মোল্লাবাড়ি এলাকায় এমন ঘটনা ঘটে। নিহত দুই ভাইবোন হলেন- নীরব মোল্লা (১২) ও নাজা বেগম (১৮)। তারা পৌর এলাকার ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি বাছির মোল্লার সন্তান। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে নীরব মোল্লা (১২) ছিল সবার ছোট এবং নাজা বেগম (১৮) ছিল দ্বিতীয়। তাদের বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। নীরব চণ্ডীবের এলাকার ব্লু-বার্ড স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। নাজা ছিলেন রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার বিকালে স্কুল থেকে ফিরে বাড়ির পাশের মাঠে ফুটবল খেলতে যায় নীরব। এক পর্যায়ে মাঠ সংলগ্ন খালে ফুটবলটি পড়ে যায়। সেটি তুলতে গিয়ে অসাবধানতাবশত পা পিছলে পড়ে খালের পানিতে তলিয়ে যায় সে। খবর পেয়ে বাড়ির লোকজনসহ স্থানীয়রা নীরবকে খালের পানি থেকে উঠিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের বাড়ির সামনে স্বজন ও স্থানীয়দের ভিড়। সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে নীরবের লাশ বাড়িতে আনা হয়।
এর কিছুক্ষণ পর নিজ ঘরের তিনতলা ছাদ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়েন নাজ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই রাত ৯টার দিকে নাজা মারা যান। দুই সন্তানকে হারিয়ে বাবা বাছির মোল্লা কেবল বলছিলেন, নীরবের মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছিল না নাজা। ভাইকে ছাড়া সে বাঁচবে না বলে কান্নাকাটি করছিল সে। আমার ঘর খালি হয়ে গেছে। তোমরা আমার দুই সন্তানরে এনে দাও। ভৈরব থানার ওসি মাকছুদুল আলম বলেন, পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নীরব মোল্লার লাশ বিনা ময়নাতদন্তে দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। বড় বোনের লাশ ভৈরব পৌঁছার পর আরও একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে বলে জানান ওসি।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
২১১ বার