দিরাই উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের প্রথম ধাপ শুক্রবার (১২ মে) শেষ হচ্ছে। সরকারের বিশেষ খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় হাওর দুর্যোগে প্রথম ধাপে ত্রাণ পাচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত ১৬ হাজার ৩শ’ জন। প্রত্যেককে ভিজিএফ এর ৩৮ কেজি চাল ও নগদ ৫শ’ টাকা দেয়া হচ্ছে। ৯টি ইউনিয়নে ১৪ হাজার ৩শ’ জনকে এবং পৌরসভায় ২ হাজার জনকে এ সহায়তা প্রদান করা হবে। উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা সূত্রে জানা গেছে- ইতিমধ্যে উপজেলার জগদল, কুলঞ্জ, দিরাই সরমঙ্গল ও পৌরসভায় বিতরণ শেষ করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ মে) রফিনগর, করিমপুর, তাড়ল, ভাটিপাড়া, চরনারচর ও রাজানাগর ইউনিয়নে প্রথমধাপ বিতরণ শেষ হবে।

ইউপি চেয়ারম্যানরা বলছেন- ক্ষতিগ্রস্তদের সংখ্যা অনুযায়ী বরাদ্দ অপ্রতুল থাকায় অনেকেই বাদ পড়ছেন। প্রথমদিকে ৯টি ইউনিয়নে ২০ হাজার ক্ষতিগ্রস্তদের নাম তালিকা করা হয়। পরবর্তীতে সরকারের বরাদ্দ অনুযায়ী তা কমিয়ে নয়টি ইউনিয়নে ১৪ হাজার ৩শ’ জনের নাম বিতরণের জন্য চূড়ান্ত করে তালিকা করা হয়। যার ফলে চেয়ারম্যান-মেম্বারদেরকে বাদ পড়াদের রোষানলের শিকার হতে হচ্ছে। বঞ্চিতদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ আর হতাশা। এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার (১১ মে) পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেন দিরাই-শাল্লার সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্ত।

এসময় উপস্থিত ছিলেন- ইউএনও তৌহিদুজ্জামান পাবেল, প্যানেল মেয়র বিশ্বজিৎ রায়, কাউন্সিলর সোহেল চৌধুরী, সবুজ মিয়া, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর মাধবী দে, হেলেনা বেগম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায়, মোহন চৌধুরী প্রমুখ। রফিনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজুয়ান হোসেন খান বলেন- রফিনগর ইউনিয়নে ২ হাজার ৫শ’ ক্ষতিগ্রস্তের নাম তালিকা করা হয়। পরবর্তীতে সরকারের বরাদ্দ অনুযায়ী তা কমিয়ে ১৭শ’ জনের নাম তালিকায় চূড়ান্ত করা হয়। ফলে তালিকা থেকে ৮শ’ নাম বাদ পড়ে যায়। বাদ পড়া লোকদেরকে সহায়তা প্রদানে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন- তার ইউনিয়নে ৪টি ওয়ার্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ৮৬৩ জনের মধ্যে প্রত্যেককে ৩৮ কেজি চাল ও ৫শ’ টাকা করে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার (১২ মে) বাকি ৫টি ওয়ার্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ত্রাণ দেয়া হবে।

প্যানেল মেয়র বিশ্বজিৎ রায় বলেন- হাওর দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কেউ যাতে বঞ্চিত না-হয় সরকার সেইভাবে সহায়তা করছে। মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্যোগ মোকাবেলায় যে মমতা দেখিয়েছেন আমাদের এমপি ড. জয়া সেনগুপ্ত শুরু থেকেই দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দিরাই-শাল্লার মানুষের কষ্টের কথা তিনি প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রীর কাছে তুলে ধরেছেন। ৯নং ওয়ার্ডে ত্রাণ বিতরণকালে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের খোঁজ-খবর নেন। এলাকার সচেতন লোকজন বলছেন- হাওরপাড়ের শতভাগ মানুষ এবারের দুর্যোগের শিকার হয়েছেন। মধ্যবিত্ত ও প্রান্তিক কৃষকরাই পড়েছেন বিপাকে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় মধ্যবিত্তদের বিশেষ বিবেচনায় এনে সহায়তা প্রদান করতে হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn