ক্রীড়া ডেস্ক: বদলী খেলোয়াড় মিচে বাতসুয়াইয়ের ৮২ মিনিটের গোলে ওয়েস্ট ব্রমউইচকে ১-০ গোলে পরাজিত করে দুই ম্যাচ হাতে রেখে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা নিশ্চিত করেছে চেলসি। ওয়েস্ট ব্রমউইচ আলবিয়নে গতকাল বেলজিয়ান স্ট্রাইকারের গোলে এন্টোনিও কন্টের দল দ্বিতীয় স্থানে থাকা টটেনহ্যাম হটস্পারের থেকে ১০ পয়েন্ট এগিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে। গত তিন মৌসুমে এটি চেলসির দ্বিতীয় শিরোপা ও সব মিলিয়ে ষষ্ঠ। জুভেন্টাস ও ইতালির সাবেক কোচ কন্টের ব্লুজ ম্যানেজার হিসেবে এটাই প্রথম মৌসুম ছিল। শিরোপা নিশ্চিতের পরেই আলবিয়নের মাঠে উদযাপনের কমতি রাখেনি ব্লুজরা। ম্যাচ শেষে মাঠের পাশেই সেই উদযাপনের সঙ্গী কন্টে বলেছেন, ‘এটা খেলোয়াড়দের একটি অনন্য অর্জন। দলের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি ও কঠোর পরিশ্রমের জন্য খেলোয়াড়দের ধন্যবাদ জানাতে চাই। এবারের মৌসুমে সম্ভাব্য সব কিছুই করার চেষ্টা তারা করেছে। এই জয়ের পরে আমাদের অবশ্যই খুশী হওয়া উচিত, সন্তুষ্ট হওয়া উচিত। ইংল্যান্ডে আসাটা আমার জন্য খুব একটা সহজ কাজ ছিল না। সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে, ভিন্ন ভাষাভাষীদের সাথে মানিয়ে নেবার পাশাপাশি একটি বাজে মৌসুম কাটানো দলকে নীচের থেকে টেনে তোলা- এসবই আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম।’

গত বছর মার্সেই থেকে ৩৩.২ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে চেলসিতে যোগ দিয়েছিলেন বাতসুয়াই। ৭৬ মিনিটে পেড্রোর স্থানে নেমেই গত আগস্টের পরে দারুণ এক গোল করে দলকে শিরোপা উপহার দেয়া বাতসুয়াই বলেছেন, এই অনুভূতি সত্যিই দারুণ। আজকের দিনটা চেলসির সেরা দিন। সবাই খুব খুশী, শিরোপা জয়ের আনন্দ সত্যিই অনন্য। চেলসি মিডফিল্ডার সেস ফ্র্যাব্রেগাস বলেছেন, আমি মনে করেছিলাম এটাও অন্যান্য দিনগুলোর মতই কেটে যাবে। প্রথমার্ধে আমরা অনেকগুলো সুযোগ নষ্ট করেছি এবং তারপরেই কিছুটা নার্ভাস হয়ে যাই। আজকের ম্যাচের সবচেয়ে সুন্দর দিক হচ্ছে যে খেলোয়াড়টি মৌসুমে খুব একটা সুযোগ পায়নি সেই জয়সূচক গোলটি করেছেন। জুভেন্টাসের হয়ে তিনটি সিরি-আ শিরোপা জয় করা কন্টে মূলত হোসে মরিনহো দ্বিতীয় মেয়াদে বাজে একটি মৌসুম কাটানো চেলসিকে টেনে তুলেছেন। গত মৌসুমে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে দারুন ব্যর্থতার দায় নিয়ে মরিনহোকে চেলসি ছাড়তে হয়েছিল। সেই বিধ্বস্ত দলটিকেই ড্রেসিং রুম থেকে মাঠ ও মাঠের বাইরে একত্রিত করে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার মূল দায়িত্ব পালন করেছেন কন্টে।

আগামী ২৭ মে এফএ কাপের ফাইনালে আর্সেনালের বিপক্ষে এখন মৌসুমের ডাবল শিরোপা জয়ের আশায় মাঠে নামবে কন্টে বাহিনী। অথচ ম্যাচ শুরুর ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ওয়েস্টব্রম ম্যাচের প্রথম সুযোগটা সৃষ্টি করেছিল। ড্যারেন ফ্লেচারের লফটেড পাস থেকে সালোমোন রনডনের হেড চেলসি গোলরক্ষক থিবাট করোটোয়িস আটকে দেন। এরপর দ্রুতই চেলসি চাপ সৃষ্টি করে খেলতে থাকে। কিন্তু কাউন্টার এ্যাটাক থেকে জেমস ম্যাকলিন স্বাগতিকদের মুখে হাসি ফোটাতে পারেনি। রক্ষণভাগের ভুলের কারণে চেলসিকে বারবার হতাশ হতে হয়েছে। এর মধ্যে থেকেই ফ্যাব্রেগাসের একটি শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর দুই মিনিটের মধ্যেই চেলসি ডেডলক ভাঙ্গতে পারতো। কিন্তু ভিক্টর মোসেসের শক্তিশালী ক্রস দুর্দান্ত গতিতে রক্ষা করেন স্বাগতিক গোলরক্ষক বেন ফস্টার। ডেভিস লুইজকে কাটিয়ে রোনডোন আরেকটি সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু তার প্রচেষ্টা কোনরকমে নষ্ট করেন সিজার আজপিলিকুয়েটা। কিন্তু ম্যাচ শেষের আট মিনিট আগে সেই কাঙ্খিত মুহূর্ত আসে। আজপিলিকুয়েটা ওয়েস্টব্রমের বক্সে ঢুকে ডান দিক থেকে এগিয়ে আসা বাতসুয়াইকে ক্রস করলে খুব কাছে থেকে চেলসিকে গোল উপহার দেন এই বেলজিয়ান।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn