জেলা বিএনপি’র কমিটি অচিরে আসছে,শুধু চেয়ারপার্সনের ঘোষনার অপেক্ষা
জেলা বিএনপি’র কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৬ জন প্রার্থী’র নাম শুনা যাচ্ছে। আগ্রহীরা ঢাকায় অবস্থান করে দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন। সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩ নেতাও বৃহস্পতিবার দলীয় চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করে সুনামগঞ্জসহ বিভাগের অন্য জেলাগুলোর সাংগঠনিক অবস্থা অবহিত করেছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি ত্রি-ধারায় বিভক্ত হওয়ায় ২০১৪ সালের ১৬ এপ্রিল জেলা বিএনপি, ১১ উপজেলা, থানা ও পৌর বিএনপির পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত করে সাবেক সংসদ সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনকে প্রথম সদস্য করে ৮৭ সদস্য বিশিষ্ট জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেন দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। গত প্রায় ৩ বছরে জেলার ১৬ টি সাংগঠনিক ইউনিটের ১৩ টির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। জেলা বিএনপি সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর ও সুনামগঞ্জ পৌর কমিটি ছাড়া অন্য ইউনিটগুলোয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জেলা কমিটি। কমিটি গঠন নিয়ে কোন কোন ইউনিটে মতভিন্নতা এখনো রয়েছে। অনেক স্থানে পাল্টা কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সংগঠনের জেলা শহরের নেতা-কর্মীদেরও দুটি বলয় রয়েছে। এসব বলয়ে বলয়ে আবার উপগ্রুপও রয়েছে। দুই বলয়ের এক বলয়ের পরিচিতি দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুল আছপিয়ার সমর্থক হিসাবে। আরেক বলয়ের পরিচিতি জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরী’র সমর্থক হিসাবে।
সম্প্রতি. সারাদেশে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য ৫১ টি সাংগঠনিক টিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সুনামগঞ্জে সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াৎ হাসান জীবনের নেতৃত্বে ৪ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এরা হলেন- কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী। এই ৪ নেতা গত ১০ মে সংগঠনের বিবদমান দুই গ্রুপের নেতৃবৃন্দর সঙ্গেই দীর্ঘ বৈঠক করেন। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখায়াত হাসান জীবন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন এবং সহসাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম বুধবার রাত ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত দলীয় চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক অবস্থা জানাতে বৈঠক করেন। এসময় সুনামগঞ্জের কমিটি গঠনসহ বিভাগের অন্যান্য জেলার সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয় বলে কেন্দ্রীয় একজন দায়িত্বশীল নেতা জানান।
বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় চেয়ারপার্সনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ডা. রফিক চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম নুরুল দলীয় চেয়ারপার্সনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
ডা. রফিক চৌধুরী বলেন,‘আমি দলীয় চেয়ারপার্সনকে সালাম দিতে গিয়েছিলাম। সাংগঠনিক কোন দায়িত্বে যেহেতু আমি নেই তাই এই বিষয়ে কোন কথাও বলিনি।’ নুরুল ইসলাম নুরুল বলেন,‘দলীয় চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করেছি, তিনি আমি কবে থেকে বিএনপি’র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছি, ছাত্রদলের দায়িত্ব কতদিন হচ্ছে পালন করেছি এসব বিষয় জিজ্ঞেস করেছেন।’ এর আগের দিন বুধবার রাতে জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য নাছির উদ্দিন চৌধুরী দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে জেলার সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরেন। নাছির উদ্দিন চৌধুরী বলেন,‘জেলার সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরতে আমি চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করেছি এবং আহ্বায়ক হিসাবে সাংগঠনিক রিপোর্ট দিয়েছি। এসময় মহাসচিব (ফখরুল ইসলাম আলমগীর) ছিলেন। কমিটির বিষয়ে দলীয় চেয়ারপার্সন-ই সিদ্ধান্ত দেবেন।’
কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন,‘সাংগঠনিক অবস্থা জানানোর জন্য বুধবার রাত ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখায়াত হাসান জীবন এবং সহ সাংগঠনিক সম্পাদক দিলদার হোসেন সেলিমসহ আমরা বৈঠক করেছি। এসময় সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাজাহান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীও উপস্থিত ছিলেন।’
ডা. সাখায়াত হাসান জীবন বলেন,‘সুনামগঞ্জের সংগঠনের বর্তমান অবস্থা আমরা জানিয়েছি। সিদ্ধান্ত নেবেন দলীয় চেয়ারপার্সনসহ দায়িত্বশীলরা। তিনি জানান, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে আগ্রহীরা হলেন- জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবুল মুনসুর শওকত, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম নুরুল। আবার অনেকে সভাপতি হিসাবে কলিম উদ্দিন আহমদ মিলনের কথা বলছেন। তিনি নিজে আগ্রহ প্রকাশ করেননি।’