‘বিচার বিভাগকে বিক্ষুব্ধ করবেন না’
সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ ছাড়া প্রেষণে থাকা বিচারকের বিদেশ যাওয়া নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় আইন না জেনে মন্ত্রণালয় ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা বলেছেন, বিচার বিভাগকে বিক্ষুব্ধ করবেন না। সোমবার নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ সংক্রান্ত বিধিমালা গেজেট না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি এমন মন্তব্য করেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচার বিভাগীয় যত কর্মকর্তা ডেপুটেশনে দিয়েছি, যদি তাদের প্রত্যাহার করি তাহলে কারো কিছু করার নেই। এর আগে সকালে শুনানির শুরুতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিধিমালা গেজেট প্রকাশের জন্য আরও দুই সপ্তাহ সময়ের আবেদন করেন। তখন প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে বলেন- কারণ কী? জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল- প্রসেস চলছে।
এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা হাসবো না কাঁদবো? যাই হোক, আমি কিছু বলছি না। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার হয়ে গেছে। কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে, কিছু অনিয়ম আছে। এগুলো নিয়ে সারাজীবন নয়। আমরা চাচ্ছি একটা সিস্টেমে চলে আসতে। প্রধান বিচারপতি অনিয়ম থেকে নিয়মে আসতে গেলে বলে- গেল গেল। তিনি আরও বলেন, ‘পত্রিকায় বলা হয়’ প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সরকারের দ্বন্ধ। আপনার মিনিস্ট্রিকে (আইন মন্ত্রণালয়) বলবেন, জেনারেল ক্লজ অ্যাক্টের ২১ পড়তে। সরকারকে বলবেন- যেসব বিচারক প্রেষণে আছে তারা সরকারি কর্মচারী না। সুপ্রিম কোর্ট জানতে চেয়েছিল প্রেষণে থাকাদের মধ্যে কারা বিদেশে যায় তাদের নাম।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা বিচার বিভাগকে বিক্ষুব্ধ করবেন না’ রাষ্ট্রপতির অনুশাসন বলে এমন কিছু করতে পারবেন না। রাষ্ট্রপতির কাছে কোনো ফাইল পাঠিয়ে যদি বলা হয়, করবেন। তখন তিনি হ্যাঁ বলেন, না বললে- না বলেন। তাই বলছি ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হয়। সিনহা বলেন, ‘ভুল বুঝাবুঝি যত কম হয় ততই ভালো। তারা (আইন মন্ত্রণালয়) মনে করলে সুপ্রিম কোর্টের ওপর আদেশ করবে, তা ভুল করবে। তারা আইন না জেনে একের পর এক ব্যবধান সৃষ্টি করছে। রাষ্ট্র এ রকম করতে পারে না। সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যেকটা সিদ্ধান্ত সিনিয়র বিচারকগণ চিন্তা করে নেয়। তারা (আইন মন্ত্রণালয়) যদি মনে করে যে, আইনের একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে দেবে তাহলে খুব ভুল করবে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনারা যদি আইন না জানেন তাহলে আমাদের কাছে ব্যাখ্যা চাইবেন। বিডিআরের মামলা কোন আইনে চলবে সেটা আমাদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। আমরা বলে দিয়েছি। সংবিধান অনুসারে ব্যাখ্যা আমরা দেব। নির্বাহী নয়। এগুলো মনে করে চলবেন।’ তিনি বলেন, ‘অল্প বিদ্যা ভয়ঙ্কর। মারাত্মক ভুল হয়ে যাবে। তারা যদি আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলে এটাই কারেক্ট, খুব ভুল হয়ে যাবে।’