ছাতকঃ ইউপি সদস্য নিখোঁজ।। ছাত্রীদের উপবৃত্তি বন্ধ
নিখোঁজ ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান
একমাস থেকে ইউপি সদস্য নিখোঁজ
ছাতকে প্রায় একমাস থেকে আব্দুর রহমান নামের নিখোঁজ ইউপি সদস্যের বাড়িতে হতদরিদ্রদের অনশন অব্যাহত রয়েছে। ফলে ১২টি গ্রামের লোকজন সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জানা যায়, উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের কাকুরা, সৈদেরগাঁও, হুরমাইনচক, ফরিদপুর, শ্রীপুর, জালালপুর, কটালপুরসহ ১২টি গ্রাম নিয়ে গঠিত দু’হাজার একশ’ ৮৯ভোটার অধ্যুষিত ১নং ওয়ার্ডের লোকসংখ্যা প্রায় ৬সহস্রাধিক। কিন্তু গত মে’ মাস থেকে ১নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রহমান নিখোঁজ রয়েছেন। ফলে ভিজিএফ, ভিজিডি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, পঙ্গু ভাতা, নাগরিকত্ব সনদ, গরু-ছাগলের রশিদ, উত্তরাধিকারি সনদসহ পরিষদের সেবাভোগি ও হতদরিদ্র লোকজন পড়েছেন চরম বিপাকে। প্রত্যহ শ’শ’ হতদরিদ্র লোকজন তার খোঁজে বাড়িতে গিয়ে তাকে না পেয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অনশন পালন করছেন। ফলে ওয়ার্ডবাসির সার্বিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে চরম অচলাবস্থা। ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান ছুটি না নিয়েই বিদেশে চলে গেছেন বলে তার একটি ঘনিষ্ট সূত্র দাবি করছে। এরআগেও এভাবে তিন আরো একাধিকবার বিদেশ ভ্রমন করেছেন বলে জানান তারা। এব্যাপারে জালালপুর গ্রামের হাজি রইছ আলী, মাসুক মিয়া, আবু মিয়া, কাকুরা গ্রামের তৈয়ব আলী ও কটালপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার গত ৩০মে’ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ইউপি চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান জানান, ১নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুর রহমান হঠাৎ করে এলাকায় নেই। তবে এব্যাপারে তিনি আইনগতভাবে কোন ছুটি নেননি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাসিরুল্লাহ খান লিখিত অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ছুটি না নিয়ে বিদেশ যাওয়ায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে শ্যই তিনি ব্যবস্থা নিবেন।
কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ৫৯জন ছাত্রীর উপবৃত্তি বঞ্চির
ছাতক উপজেলার জাউয়া ডিগ্রি কলেজে কতৃপক্ষের গাফিলতিতে ৫৯জন ছাত্রী উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এতে সর্বত্র ক্ষোভ ও অসন্তেুাষ বিরাজ করছে। উপবৃত্তির ফরম পূরণে মনগড়া মোবাইল নাম্বার দেয়ায় এপরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগিরা জানান, ব্যাংক একাউন্টের জন্য প্রয়োজনীয় পিন নম্বর আনতে গিয়ে দেখেন কলেজ কর্তৃপক্ষ ভিন্ন ব্যক্তির ফোন নাম্বার দিয়ে ফরম পূরণ করেছেন। ফলে নির্দিষ্ট নাম্বার না পেয়ে তারা একাউন্টের পিন কোড উদ্ধার করতে পারেননি। এর মধ্যে অধিকাংশ নম্বর বন্ধ রয়েছে বলে ছাত্রিরা জানান। গত ৭জুন ছিল উপবৃত্তিপ্রাপ্তদের একাউন্ট খোলার শেষ দিন। এসব নাম্বারে বারবার যোগাযোগ করেও না পেয়ে হতাশ হয়ে ছাত্রিরা বাড়িতে ফিরে যান। এ নিয়ে কলেজের শিক্ষক ও অফিস কর্মকর্তারা ছাত্রিদের সাথে দূর্ব্যবহার করেন বলেও তারা অভিযোগ করেছে। ডিগ্রি ২য় বর্ষের ছাত্রি লিপি শুল্কা বৈদ্য জানান, ডিগ্রিতে ভর্তি হওয়ার সময় তিনি যে ফরম পূরণ করেছেন সে ফরমে তার মোবাইল নাম্বারসহ সব তথ্য কলেজে সংরক্ষিত রয়েছে। কিন্তু উপবৃত্তির ফরম পাঠানোর সময় মনগড়া মোবাইল নাম্বার দিয়ে তার ফরম পূরণ করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফলে তিনি উপবৃত্তির উপযুক্ত হয়েও পাওনা থেকে বঞ্চিত হলেন। আরেক শিক্ষার্থী রিম্মি দাশ জানান, তিনি এবং তার চাচাতো বোনের ফরমে যে মোবাইল নাম্বার দেয়া হয়েছে এর মধ্যে একটি নাম্বার বন্ধ এবং আরেকটি নাম্বার অন্য ইউপির অপরিচিত এক ব্যক্তির। ওই ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করলে তার নাম্বার দিয়ে পিন নাম্বার এনে দিতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে কলেজের কিছু শিক্ষক ও কর্মকর্তা উজ্জ্বল অনেক দূর্ব্যবহার করেন। এভাবে মৌমিতা পারোল মনি, মিসলুফা আক্তার জানান, ৭জুন তাদেরকে ফোন করে কলেজে আনা হয়। ফরমে দেয়া অপরিচিত নম্বরে ফোন করে পিন কোড আনার জন্য বলা হয়। কিন্তু চেষ্টা করেও তারা আনতে পারেনি। কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুল গাফ্ফার জানান, উপবৃত্তির ফরম পূরণের সময় তিনি ট্রেনিংয়ে ছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে এই ভুল হয়ে গেছে। পরে তিনি চেষ্টা করেও কিছু করতে পারেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম রব্বানী জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ যেভাবে ফরম পূরণ করে দিয়েছে সেভাবেই মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ভূল করলে এখন তা সংশোধনের সুযোগ নেই। তবে দায়িদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন।