অকাল বন্যার পর এবার কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত সুনামগঞ্জ
অকাল বন্যার পর সুনামগঞ্জে এবার আঘাত হেনেছে কালবৈশাখী ঝড়। গতকাল রোববার রাতের ওই ঝড়ে আট শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সুনামগঞ্জ সদর। রাতে জেলার পাঁচ উপজেলায় ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে শতাধিক গাছপালা। রাত ১১টার দিকে ওই ঝড় শুরু হয়। গত দুই সপ্তাহ ওই জেলায় পাহাড় থেকে আসা ঢলে অকাল বন্যা দেখা দেয়। ডুবে যায় সব হাওর। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা। এসব উপজেলার টিনশেড বাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, আধাপাকা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে।
সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগর, ঘোলঘর, নতুনপাড়া, নবীননগর, বড়পাড়া, তেঘরিয়া, আরপিননগর, মোহাম্মপুর, মাইজবাড়ি এলাকার আড়াই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। ভেঙে গেছে বাড়ির সীমানা প্রাচীর, উপড়ে পড়েছে গাছপালা। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ঝড়ের আঘাতে আরো দুই শতাধিক বাড়িঘর ও গাছপালা ভেঙে গেছে। ঝড়ে বসত ঘরের টিন কয়েকশ গজ দূরে গিয়ে পড়ে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। হাছননগর এলাকার হোসেন মিয়া বলেন, ‘গত রাতের ঝড়ে আমরা ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে যায়। আমি যদি ঘরে না থাকতাম তাহলে আমার বউ ছেলেমেয়ে ঘরের নিচে চাপা পড়ত। আমি কোনোমতে তাদের নিয়ে অন্য জায়গায় যাই।’ ঘোলঘর এলাকার মিঠুন দে বলেনন, ‘এর আগে এত বড় ঝড় দেখিনি। আমাদের আশপাশের প্রায় সব ঘরের চাল উড়ে গেছে। নদীর পাড়ের বেশির ভাগ বড় গাছ পড়ে গেছে।’ আব্দুল্লাহপুরের বাসিন্দা মো. হারুন অর রশীদ জানান, পশ্চিমপাড়ার বেশির ভাগ ঘরের চাল ভেঙে গেছে। মানুষের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমিন জানান, গতরাতের ঝড়ে উপজেলার এক থেকে দেড়শ আধা কাঁচা ঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে। ঝড়ে বিধ্বস্ত একাধিক এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘রাতে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে, এতে বেশ কিছু বাড়িঘর ও গাছপালা ভেঙে গেছে। কিছুক্ষণ পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করব।’ ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি জানান। সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার বরকত উল্লাহ খান জানান, রাতের ঝড়ে তাঁর কার্যালয়ের বড় গাছ ভেঙে পড়েছে। অন্য বাড়ির টিনের চাল এসে এসপির বাড়ির ভিতরে পড়েছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।