অর্থমন্ত্রী তো জানেন কারা অর্থ পাচার করে: পীর ফজলুর
জাতীয় সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাংসদ পীর ফজলুর রহমান বলেছেন, অর্থমন্ত্রী অর্থ খাতের একজন মেধাবী লোক। তিনি তো ভালো জানেন কারা অর্থ পাচার করে। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে পীর ফজলুর রহমান এসব কথা বলেন। টাকা পাচার ঠেকাতে না পারায় তিনি অর্থমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করেন।
পীর ফজলুর রহমান বলেন, টাকা বিদেশে পাচার হয়, অর্থমন্ত্রী ঠেকাতে পারেন না। শেয়ারবাজার লুটপাট হয়, অর্থমন্ত্রী তা খুঁজে পান না। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বলছে, ৫ বছরে ১ হাজার ২৪টি অর্থ পাচারের প্রমাণ মিলেছে। তাহলে অর্থমন্ত্রী তথ্য পান না কেন?বাজেট আলোচনার সময় সংসদে অর্থমন্ত্রীর উপস্থিত না থাকার সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির সাংসদ পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা বাজেট বক্তৃতা দিচ্ছি। কিন্তু অর্থমন্ত্রীকে গতকালও আমরা সংসদে পাই নাই। আজকেও নাই।’পীর ফজলু বলেন, টাকা নিয়ে পি কে হালদার বিদেশে গিয়ে ঘুমান, আর তাঁর বান্ধবীদের এখানে জেলে ঘুম পাড়ানো হচ্ছে। তাঁরা এটা দেখতে চাননি। তাঁরা দেখতে চেয়েছিলেন, টাকা নিয়ে পি কে হালদাররা যেন বিদেশে চলে যেতে না পারেন।
জাতীয় পার্টির এই সাংসদ বলেন, দেশ থেকে কারা টাকা পাচার করছে, সে তালিকা অর্থমন্ত্রী চান সংসদ সদস্যদের কাছে। সংসদ সদস্যরা কীভাবে তালিকা দেবেন? তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। কারা অর্থ পাচার করে, তিনি সেই তালিকা নেবেন।পীর ফজলু বলেন, ‘প্রতিটা অডিট রিপোর্টে আছে কীভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। সেখান থেকে অর্থমন্ত্রী তথ্য নিতে পারেন কারা টাকা পাচার করে। সিএজির গত চার বছরের অডিট প্রতিবেদন বলছে, ৩১ হাজার কোটি টাকা লুট। চার বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে জালিয়াতি, সরকারি অর্থের মোট অনিয়মের ৫২ শতাংশই ব্যাংকিং খাতে। ৯ বছরে অনিয়ম বেড়েছে ১৬ গুণ। এটি অডিটর জেনারেলের চার বছরের অডিট থেকেই এসেছে। এখান থেকে তিনি পান না কেন?’পীর ফজলুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, স্বাস্থ্যের নয়, অন্য খাতের টাকা গেছে কানাডায়। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সেই রিপোর্টগুলো বাদ দিলেও দুদক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১১টি দুর্নীতির খাত চিহ্নিত করেছে।
গণমাধ্যমের সূত্র দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কমপক্ষে এক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে স্বাস্থ্য খাতের যন্ত্রপাতি কেনায়।জাতীয় পার্টির এই সাংসদ বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সাফাই না গেয়ে যারা দুর্নীতি করছে, তাদের ধরেন। এই করোনাকালে এসে অন্তত বিবেক জাগ্রত হোক। এই দুর্নীতিবাজদের ধরেন। মানুষের চিকিৎসার নিশ্চয়তা দেন। টিকা নিয়ে আমরা কোনো কথা শুনতে চাই না। টিকা নিশ্চিত করতে চাই।’ অন্যদের মধ্যে সরকারি দলের সাংসদ রমেশচন্দ্র সেন, ইকবাল হোসেন, ইউসুফ আবদুল্লাহ, সংরক্ষিত আসনের সাংসদ নাদিরা ইয়াসমিন, নাহিদ এজহার খান, জাতীয় পার্টির আবু হোসেন প্রমুখ সংসদে আলোচনায় অংশ নেন।-প্রথম আলো