বার্তা ডেক্সঃ এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করেছে, দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে লৌহহস্তে। বৃহস্পতিবার গণভবনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’-এর স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। এসময় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল প্রমুখ। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন বৈঠক বিষয়ে ব্রিফ করেন।

তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে সরকার গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, লেখাপড়া করে চাকরির পেছনে না ছুটে তরুণরা যাতে উদ্যোক্তা হতে পারে এবং অন্যদের চাকরি দিতে পারে সে জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে দেশে শিক্ষার হার ও মান বৃদ্ধি পায়। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে তার সরকার শিক্ষা, গবেষণা, উৎপাদন ও উৎকর্ষের পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে। একই সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে সরকার দেশকে ধীরে ধীরে শিল্পায়নের দিকে টেনে নিচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, তার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নির্দেশনায় সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে। জয় ইয়ং বাংলা ও সিআরআই-এর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করছে। দেশের উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ২০৪১ সালে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক কাজের জন্য অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক কাজের জন্য অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (প্রাক্তন ছাত্র সমিতির) মাধ্যমে আপনারা (বিশ্ববিদ্যালয়ের) নিজস্ব তহবিল বাড়ান।

প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ করতে পারে এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিটি শিক্ষার্থীকে দেশের উন্নয়নে সময়ের উপযোগী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত মেধাবী এবং তাদের একটু সুযোগ দিলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে বিদেশ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে আসতে পারবে।

এ লক্ষ্যে তিনি শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আরও দায়িত্বশীল ও মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে সোনার ছেলে-মেয়ে হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত করতে হবে যাতে তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকে। এ লক্ষ্যে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিতে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন এবং পর্যায়ক্রমে এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn