বার্তা ডেক্স :: অবসরে যাওয়ার পর ‘আত্মসাতের’ সরকারি টাকা ফেরত দিলেন সিলেট নগরীর মইন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজের সেই আলোচিত অধ্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিন। কলেজের মাঠে মাটি ভরাট প্রকল্পের ১ লক্ষ টাকা নিয়ে নানা টালবাহানার পর অবশেষে ফেরত দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ‘টিআর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি’র সভাপতি- কলেজের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কৃষ্ণপদ সূত্রধর। এর আগে এই প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। এ বিষয়ে ৩ মার্চ (বুধবার) সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন কলেজের প্রভাষক মো. মাহবুবুর রউফ।

অভিযোগ দায়েরের পর টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। টাকা ফেরত দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ চাঁপ দেন মইন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিনকে। চাপে পড়ে তিনি ১ লক্ষ টাকা ফেরত দিলে অবশেষে গতকাল (৫ মার্চ) থেকে কলেজের মাঠে মাটি ভরাট কাজ শুরু হয়েছে।

প্রভাষক মো. মাহবুবুর রউফের দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, ২০১৯ সালে মইন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজের তৎক্ষালীন অধ‍্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিন কলেজের মাঠে মাটি ভরাটের জন্য সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন। পরবর্তীতে ওই বছরের জুন মাসে অধ‍্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিনের স্বাক্ষর নিয়ে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে জন্য ১ লক্ষ টাকা অনুমোদিত হয়। সেই সময়ে কলেজের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কৃষ্ণপদ সূত্রধরকে সভাপতি এবং কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও ব‍্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রভাষক মো. এনামুল হক চৌধুরী সুহেলকে প্রধান সদস্য করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট ‘টিআর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি’র নামে কমিটি গঠন করা হয়।

কিন্তু বিধিমোতাবেক সর্বোচ্চ ৬ মাসের মধ্য কলেজের মাঠে মাটি ভরাট কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন দেওয়ার নিয়ম থাকলেও প্রায় ২ বছর হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মাঠ ভরাট হয়নি। পাশাপাশি বরাদ্দের ১ লক্ষ টাকার হিসাবও যথাসময়ে দেননি প্রাক্তন অধ্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিন। তবে এ বিষয়ে ৩ মার্চ সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর টনক নড়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে খোঁজ নেন ‘টিআর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি’র সদস্যদের এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা তাগিদ দেন। কর্তৃপক্ষের তাগিদ পেয়ে সেই বরাদ্দের টাকা   ফেরত দেয়ার জন্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিনকে চাপ দেয় কমিটি। চাপে পড়ে তিনি ১ লক্ষ টাকা ফেরত দিলে অবশেষ শুক্রবার (৫ মার্চ) থেকে কলেজের মাঠে মাটি ভরাট কাজ শুরু হয়েছে।

এ ব‍্যাপারে ‘টিআর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি’র সভাপতি কৃষ্ণপদ সূত্রধর সিলেটভিউ-কে বলেন, প্রকল্পের টাকা পাস হয়ে আমার ব্যাংক এ্যাকাউন্টে আসার পর প্রাক্তন অধ্যক্ষ মো. গিয়াস উদ্দিন আমার কাছ থেকে ওই ১ লক্ষ টাকা কাজ করাবেন বলে নিয়ে নেন। কিন্তু পরবর্তীতে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে ওই মৌসুমে আর মাটি ভরাট হয়নি। তাই নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন তিনি সেই টাকা দিয়েছেন।গতকাল (শুক্রবার) থেকে মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে। শুক্রবার এক ট্রাক ও শনিবার ৩ ট্রাক মাটি মাঠের মধ্যে ফেলা হয়েছে। পুরো এক লক্ষ টাকার কাজই হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn