আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিচার করা উচিত: জাতিসংঘ
রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন করার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মিয়ানমারের নেতাদের বিচার করা উচিত বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান প্রিন্স জেইদ বিন রায়দ জিন্দ আল-হুসাইন। গতকাল শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে জেইদ এ মন্তব্য করেন। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, যেখানে গণহত্যা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে সেখানে পর্যবেক্ষকদের প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান জেইদ।জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘যদি তারা (মিয়ানমার) রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করতে চায়, তাহলে রাখাইন রাজ্যে আমাদের প্রবেশের আমন্ত্রণ জানাক।’জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার বলেন, ‘আমরা বলছি যে, সন্দেহ করার মতো যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সেখানে গণহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। তবে শুধু আদালতই এই বিষয়ে নিশ্চিত করতে পারে।’ এর আগে গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং টুন বলেন, ‘যদি গণহত্যা হয় তবে তাদের (রোহিঙ্গা) সবাইকে বের করে দেওয়া হতো।’ থাউং টুন আরও বলেন, ‘আমরা প্রায়ই অভিযোগে শুনি যে মিয়ানমারে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আমি আগে বলেছি এবং আবারও বলছি—এটা সরকারের কোনো নীতি নয় এবং এ ব্যাপারে আপনাকে আমরা নিশ্চয়তা দিতে চাই। যদিও অভিযোগ রয়েছে, তবে আমরা স্পষ্ট প্রমাণ দেখতে চাই।’ এ বিষয়ে রো না সান লউইন নামের একজন রোহিঙ্গা সদস্য আজ জাজিরাকে বলেন, ‘মিয়ানমারের নেতাদের আইসিসিতে বিচার করা এবং সেখানে চলমান গণহত্যা বন্ধের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ ওই রোহিঙ্গা আরও বলেন, ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা ন্যায়বিচার খুঁজছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকারের বিরুদ্ধে ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মানবতা ও গণহত্যার অভিযোগ করা হচ্ছে। শুধু রোহিঙ্গা নয়, কাচিন, কারেন, শান এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপরও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এ সময় তিনি মিয়ানমারের সিনিয়র জেনারেল মিন অং হোলিং এবং স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে হেগের আদালতে বিচারের জন্য দাড় করানোর দাবি করেন। গত বছরের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিধনের মুখে পড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বাংলাদেশে রোহিঙ্গা প্রবেশের ধারা এখনও বজায় রয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক স্যাটেলাইট চিত্র অনুযায়ী—গত আগস্ট থেকে ৩৬০টির বেশি রোহিঙ্গা গ্রাম আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।