‘আর ভালো লাগে না’
কামরুজ্জামান মিলু-
সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখতে বরাবরই আমার ভালো লাগে। পরিকল্পনা করেছি বোরকা পরে সিনেমা হলে যাবো এবার। ঈদের ছবি সবাই মিলে দেখায় অনেক আনন্দ পাওয়া যায়। এবারের ঈদে শাকিব অভিনীত ‘নবাব’ ও ‘রাজনীতি’ ছবি দুটি প্রথমে দেখব। এরপর আরেকটি ছবি ‘বস টু’ দেখার ইচ্ছে আছে। হলে ঢুকে দর্শকের চোখের আড়াল হয়ে সিনেমা দেখার মজাই আলাদা-ঈদে সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখার বিষয়ে এ কথাগুলো বলছিলেন ঢালিউডের ব্যবসাসফল ছবির জনপ্রিয় মুখ শাবনূর। ঈদের দু’দিন আগে অস্ট্রেলিয়া থেকে ঢাকায় এসেছেন এই অভিনেত্রী। গতকাল মানবজমিনের সঙ্গে সাম্প্রতিক চলচ্চিত্রের অবস্থা, যৌথ প্রযোজনার ছবি, শাকিব খান ইস্যু, নিজের কাজের পরিকল্পনাসহ বেশকিছু বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। বিশেষ করে কয়েকদিন আগে শাকিবকে ১৮ সংগঠনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সম্পর্কে অভিমত জানতে চাইলে শাবনূর বলেন, শকিবকে নিয়ে যা ঘটছে তা একেবারেই কাম্য না। আমি পুরো বিষয়টি জানি না। তবে যেটুকু শুনেছি তাতে বলতে চাই যে, শাকিবকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দরকার নেই। শাকিব তো বসে নেই, টানা কাজ করছে। এত বছর কাজ করে একজন শিল্পীর এটা প্রাপ্য না। এটুকু সম্মান তাকে দেয়া উচিত। কাজ করতে গিয়ে একটা মানুষের ভুল-ত্রুটি হতেই পারে। সিনিয়র যারা আছেন তাদের সঙ্গে বসে এসব ঠিকঠাক করে নেয়া উচিত। কারণ, একজন শিল্পীর মুখ আরেকজন শিল্পীকে দিন শেষে দেখতেই হবে। রেষারেষি করে লাভ নেই। আমরা আর্টিস্ট সব এক। কোথাও বেড়াতে যাই বা পিকনিকে যাই সেখানে গিয়ে একে অন্যের মুখোমুখি হতেই হবে। তাই যে ভালো কাজ করে তাকে না টেনে উৎসাহ দেয়া উচিত। আমার মনে হয়, আল্লাহ যাকে ওঠায় তাকে কেউই চাইলেও নামাতে পারে না। শাবনূর আরো বলেন, ইন্ডাস্ট্রিতে শাকিব জনপ্রিয় নায়ক। তার সিনিয়র অনেকে ইন্ডাস্ট্রিতে এখনো আছে। তাদের কাছে গিয়ে শাকিব সুন্দরভাবে কথা বললে সবাই খুুশি হবে। অনেক বছর শাকিব কাজ করেছে, সে নিজেও এখন সিনিয়র শিল্পী। অন্যদিকে, পরিচালক ও প্রযোজকরা অনেক সিনিয়র। তাদের সঙ্গে বসে যেকোনো বিষয় ঠিক করে নিতে পারবে। কারণ, প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পী সবাই মিলেই একটা টিম ওয়ার্ক। আমি অনেক বছর কাজ করেছি। দর্শক ভালোবাসে বলেই আমি শাবনূর হতে পেরেছি। এখানে দর্শকেরও বিরাট অবদান আছে। শাকিব একটা ভালো পজিশনে আছে। তাকে কেউই ঘৃণা করে না। দর্শকও তাকে খুব পছন্দ করে। আমি চাই এই সমস্যার দ্রুত অবসান হোক। এদিকে যৌথ প্রযোজনার ছবি নিয়ে অনেক দর্শক এবং ইন্ডাস্ট্রি সংশ্লিষ্টদের মনে সংশয় তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে জাজ মাল্টিমিডিয়া অনেক বেশি যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণ করছে। এ বিষয়ে শাবনূর বলেন, যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণ হলে ক্ষতি নেই । বর্তমানে কি হচ্ছে তার সবটুকু আমি জানি না। তবে এটুকু বলতে পারি যে, যৌথ প্রযোজনার ছবি হলে সমস্যা নেই। বছরে ২-৩টা ছবি শাকিব খান করলে সমস্যা নেই। বাকি সময় ইন্ডাস্ট্রিতে অন্য প্রযোজক-পরিচালকদের সময় দিতে হবে। আর জাজ মাল্টিমিডিয়া যদি বছরে ১০টা ছবিতে শাকিবকে নেয় তখন কি সে নিষেধ করতে পারবে? আসলে শিল্পী কাউকে নিষেধ করতে পারে না। এসব প্রযোজকের বিষয়। পরিচালকও চাইলে তা পারে না। ভালো ছবি দর্শকরা দেখছে। যৌথ প্রযোজনার পাশাপাশি আমাদের দেশীয় প্রোডাকশনেও ভালো ছবি বেশি প্রয়োজন। ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়কদের বিপরীতে টানা অভিনয় করে দর্শকের মনিকোঠায় অল্প সময়ে জায়গা করে নেন শাবনূর। এবার দেশে এসে অপু ও শাকিবের সন্তান আব্রাহাম খান জয়কে দেখতে চান তিনি। শাবনূর বলেন, শাকিব ও অপুর ছেলেটা অনেক কিউট হয়েছে। আমি খুব শিগগিরই তাকে দেখতে যাবো। ঢাকার প্রেক্ষাগৃহে শাবনূর অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি হচ্ছে মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘কিছু আশা কিছু ভালোবাসা’। সবশেষ গত বছর শাবনূর দুবার অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে আসেন। এর মধ্যে একবার এসে ‘ইউরো স্টার’ নামে একটি কোম্পানির চুলার বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হিসেবে কাজ করেন। এটি নির্দেশনা দেন আহমেদ ইলিয়াস। এছাড়া গত বছর মোস্তাফিজুর রহমান মানিক তার ‘এত প্রেম এত মায়া’ নামের ছবিতে তাকে চুক্তিবদ্ধ করেছিলেন। তবে শাবনূর এ ছবির শুটিংয়ে এখনো অংশ নেননি। এ ছবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবার আর যাচ্ছি না। মানিকের ছবিতে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে। এই অস্ট্রেলিয়া টু ঢাকা দৌড়াদৌড়ি করতে আমারও আর ভালো লাগে না। এবার কাজে ফিরতে চাই। ওজন আগের চেয়ে একটু কমিয়েছি। আশা করি খুব দ্রুত কাজে ফিরতে পারব।