আ’লীগকে বুঝতে হবে তারা গণমানুষের না লুটেরা গোষ্ঠীর -পীর হাবিব
পীর হাবিবুর রহমান।।
গেল বছরের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় ডা. নুজহাত চৌধুরীর হৃদয়স্পর্শী বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাসহ সবাই অশ্রুজলে সিক্ত হয়েছিলেন। পিনপতন নীরবতায় আবেগমথিত বক্তব্য টেলিভিশনের পর্দায় আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনেছি। একাত্তরের শহীদ ডা. আলীম চৌধুরীর কন্যা শিশু বয়সে বাবা হারানোর গভীর বেদনা ও ক্রন্দন সয়ে অন্তহীন দহন নিয়ে সংগ্রামী মা শ্যামলী নাসরিন চৌধুরীর স্নেহছায়ায় শুধু চিকিৎসকই হননি; সমাজের সাহসী, আলোকিত নারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার স্বামী ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নিলও নিজেকে একজন প্রখ্যাত লিভার বিশেষজ্ঞ হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত করেননি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রকৌশলী পিতার এই পুত্র বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মানুষ হয়েছেন। নুজহাতের একজন আদর্শিক জীবনসঙ্গী হওয়ার গৌরবও অর্জন করেছেন। এই যুগলের সব সময় আমার হৃদয়নিঃসৃত স্নেহধারা অনুভব করি।
পূর্বপশ্চিমবিডি নিউজপোর্টাল থেকে গেল বছর ভালোবাসা দিবসে যে ৭ যুগলকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছিল, স্বপ্নিল-নুজহাত তাদের মধ্যে অন্যতম। একটি সুন্দর বাগান, একটি নদী, উড়ে যাওয়া পাখি এবং জলজোছনার রাত যেমন আমাকে মুগ্ধ করে, তেমনি স্বপ্নিল-নুজহাত যুগলকে দেখলেই আমার মন ভালো হয়ে যায়। স্নেহভাজন ড. নুজহাত চৌধুরী সেই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, আপনারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী, আপনারা স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন, আপনারা এমন কিছু করবেন না; যাতে মানুষের মনে কষ্ট হয়। তিনি যখন কথা বলছিলেন, মনে হচ্ছিল হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে বিবেকের তাড়নায় অকপটে সত্য উচ্চারণ করছেন। সেই কঠিন সত্য যেটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বলে গেছেন, তিনি সেই আহ্বান করেছেন স্বাধীনতা-উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে কঠিন পরিস্থিতির মুখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বারবার সেই আহ্বান জানিয়েছেন। বারবার সেই আকুতি করেছেন।
একবার একটি লেখার শিরোনাম দিয়েছিলাম, ‘বঙ্গবন্ধু বাড়ি আছো?’ মানে দেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে বাঙালি জাতির মহত্তম নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শিক প্রভাব আমি কোথাও দৃশ্যমান দেখছিলাম না। অথচ তিল তিল সংগ্রামের ভেতর দিয়ে দীর্ঘ সংগ্রামের পথ হেঁটে একটি জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে এক মোহনায় মিলিত করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই প্রতিষ্ঠার জন্য অমিত সাহস নিয়ে বারবার জেল-জুলুমই সইতে হয়নি, মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। তার রাজনীতি ছিল মানবকল্যাণের, তার রাজনীতি ছিল সাদামাঠা সরল, নিরাবরণ জীবনে ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল, অনুসরণীয়।
ভোগবাদী রাজনীতি, নীতিহীন পথ, অর্থবিত্তের নেশা তাকে কঠিন পরিস্থিতির মুখেও স্পর্শ করতে পারেনি। সৎ, সাহসী রাজনীতির এই কিংবদন্তি, দুনিয়া কাঁপানো নেতা এমনি এমনি হয়ে ওঠেননি। তিনি ভালোবেসেছিলেন দেশের প্রতিটি মানুষকে, ভালোবেসেছিলেন আত্মা দিয়ে এই দেশের মাটি ও মানুষকে। সংখ্যাগরিষ্ঠ গরিবের জন্য ছিল তার কোমল হৃদয়। সেই মহান নেতাকে পরিবার-পরিজনসহ ’৭৫-র ১৫ আগস্টের কালরাতে জীবন দিতে হয়েছে। তার হত্যাকা- বাংলাদেশকেই নেতৃত্বহীন করেনি, বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠকেও দুর্বল করেছিল। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-ের নেপথ্যে ছিল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের নীলনকশা। একাত্তরের পরাজিত বিশ্ব মোড়লদের প্রতিশোধ গ্রহণের মোক্ষম সুযোগ। আর সেই সুযোগ করে দিয়েছিলাম আমরা। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধু ছিলেন গভীর ধ্যানে মগ্ন।
অন্যদিকে শাসক দল আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে ছিল নেতৃত্বের, কর্তৃত্বের দৃশ্যমান, নির্লজ্জ দ্বন্দ্ব, সংঘাত। ছিল কারো কারো ক্ষমতার দম্ভের উন্নাসিকতা। এ ছাড়া পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির অন্ধকার রাজনীতি, শ্রেণিশত্রু খতমের নামে জনপ্রতিনিধি হত্যা ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের মতো বর্বরতা সীমা লঙ্ঘন করেছিল। সেই সীমা লঙ্ঘনের তালিকায় যুক্ত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে উঠে আসা শাসক দল ভেঙে বেরিয়ে যাওয়া উগ্রপন্থি, হঠকারী, রোমান্টিক, তারুণ্যনির্ভর রাজনৈতিক শক্তি। অতিবামদের কথা বলতেও খারাপ লাগে।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চট্টগ্রামের দলীয় প্রতিনিধি সভায় বলেছেন, ‘পাওয়ার বা ক্ষমতা বেশিদিন থাকে না। অনুরোধ করি, ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। এটা আমানত। টাকা-পয়সা বেশিদিন থাকবে না।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে টাকা-পয়সা নিয়ে পালাতে হবে। তা কি ভাবেন না? দল যদি ক্ষমতায় না থাকে, এখন যে টাকা- পয়সা রোজগার করছেন, তখন এই টাকা নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে। এটা ভাবতে হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, পকেট ভারী করার জন্য খারাপ লোকদের দলে টানবেন না। দুঃসময় এলে তাদের হাজার পাওয়ারের বাতি দিয়ে খুঁজে পাবেন না।
কোন্দল মিটিয়ে দলের ঐক্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের শত্রু আওয়ামী লীগ হলে আমাদের রক্ষা করার আর কেউ থাকবে না। ঐক্যবদ্ধ থাকলে বাইরের শক্তিকে আমরা মোকাবিলা করতে পারব। আপন ঘরে যদি শত্রু থাকে তার আর বাইরের শত্রুর দরকার নেই।’
শুধু ওবায়দুল কাদেরই নন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও অনেক সভায় বলেছেন, বিত্তবৈভব, ভোগবিলাস, খাই খাই স্বভাব নয়; রাজনীতি হলো মানুষের কল্যাণের জন্য। মানুষের কল্যাণে স্বার্থ ত্যাগের। দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে যতই বলা হোক না কেন, তবু যেন কেউ তা শুনছেন না। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলকে দলের উন্নাসিকরা, নেতৃত্বের কোন্দলে জর্জরিত নেতাকর্মীরা, অন্যদিকে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও অতিবিপ্লবীরা অন্ধকার শক্তি হয়ে অস্থির-অশান্ত করেছিলেন। চলমান জাতীয় ও বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে হাওয়া বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অনুকূলে রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিস্ময়কর জায়গায় উঠেছে। পশ্চিমা দুনিয়া অবাক হয়ে বলছে, বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার বাঘ।
কিন্তু এ কথা সত্য, মুজিবকন্যার ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা-ের ভেতর দিয়ে একটা লুটেরা গোষ্ঠী আবির্ভূত হয়েছে। রাজনৈতিক বাণিজ্যিকীকরণের কবলে পতিত দলের একটি অংশ রাজনীতির কল্যাণের মহান পথ ছেড়ে রাজদুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। মাঠ পর্যায়ে নিজেরা ব্যক্তিস্বার্থে উন্নাসিক আচরণই নয়; দ্বন্দ্ব-কোন্দলেও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক শক্তি ময়দানে দুর্বল হয়ে পড়ায় এরা আরও বেশি অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। ক্ষমতার অন্ধ মোহে নিজেরাই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন। বিত্তবৈভব, ভোগবিলাস, দুহাতে টাকা কামানোর উন্মত্ত নেশা তাদের পেয়ে বসেছে। এরা কোথাও দলের জনপ্রতিনিধি, কোথাও বা দলের মাঠের নেতা। ব্যবসা-বাণিজ্য, টেন্ডার, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট তাদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের কারণে হাওর অঞ্চলের বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ঘটে যায়। ব্যাংকিং খাতে লুটপাট ঘটে যায়। শেয়ারবাজারে হয়ে যায় অবাধ লুণ্ঠন। এমনকি এদের হাতে দলের তৃণমূল নেতারা হয়ে যান মনোনয়ন-বাণিজ্যের শিকার। সাধারণ মানুষ হয় নিয়োগ-বাণিজ্যের অভিশাপে অভিশপ্ত।
ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য রাজনীতির দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকেই উঠে এসেছে। পরিবার-পরিজনসহ দানব শক্তি মানবসভ্যতার আলোকিত নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধুকে তার বাসভবনে নৃশংসভাবে হত্যা করলেও তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কলঙ্ক আনতে পারেনি। সারা দেশের হাজার হাজার নেতাকর্মী কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে নিক্ষিপ্ত হলেও তাদের সৎ, নিরাবরণ, সাদামাঠা জীবনের চরিত্রে কলঙ্ক দিতে পারেনি।
একদা রাজনীতি ছিল তৃণমূল থেকে উঠে আসা আইনজীবী, শিক্ষক, ফুলটাইম আদর্শিক সংগঠক, নেতাকর্মীদের হাতে। সংসদে ছিল আইনজীবী, শিক্ষক অর্থাৎ রাজনীতিবিদদের একচ্ছত্র প্রাধান্য। সেনাশাসকদের হাত ধরে সেখানে উঠে আসতে থাকেন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক, বেসামরিক আমলা ও ব্যবসায়ীরা। একদা সততার সঙ্গে রাজনীতিবিদরা মানুষের কল্যাণে ত্যাগের মহিমায় আদর্শ বুকে নিয়ে রাজনীতি করতেন। দল পরিচালনা ও নির্বাচনে শুভাকাক্সক্ষী, আত্মীয়স্বজন ও ব্যবসায়ীরা সাহায্য করতেন। সেনাশাসন জমানার অবসানের পর রাজনৈতিক দলগুলো তাদের রেখে যাওয়া ধারাকেই রাজনীতিতে বহন করেন। এতে এখন রাজনীতিতে ব্যবসায়ী, সামরিক, বেসামরিক অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের অনুপ্রবেশই ঘটেনি; কর্তৃত্বও তাদের হাতে চলে যাচ্ছে। রাজনীতিবিদরাও অনেক ক্ষেত্রে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় অর্থের নেশায় ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছেন।
জাতির জীবনে অভিশাপ হয়ে আসা ওয়ান-ইলেভেনে বিশ্বনন্দিত ব্র্যান্ডের গাড়ি রাস্তায় ফেলে অনেকে পালিয়েছেন। দলীয় ক্ষমতার দাপটে অর্জিত অর্থ নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন। অনেকে দেশ ত্যাগ করেছেন। সেই সময়ে পূর্ববর্তী ক্ষমতাবানদের সঙ্গে, লুটেরাদের সঙ্গে চড়া মূল্য দিয়েছেন রাজপথে থাকা বিরোধী দলের নেতাকর্মীরাও। দিয়েছেন ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষরা। সেই পরিস্থিতির আলোকেই ওবায়দুল কাদের সংযত হতে বলেছেন, সতর্ক করেছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তার সাংগঠনিক টিম নিয়ে সারা দেশে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে গিয়ে যে বাস্তবতার মুখোমুখি হচ্ছেন, যে দৃশ্যপট দেখছেন সেখান থেকেই হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে এমন আর্তনাদ করছেন।
জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের পেছনে জনগণের সমর্থন রয়েছে। সুমহান মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের, সন্ত্রাসবাদের, ধর্মের নামে সহিংসতার সুযোগ নেই। এটি গ্রহণযোগ্যও নয়, তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন-যৌবন উৎসর্গ করে তৃণমূল বিস্তৃত শক্তিশালী, ঐতিহ্যবাহী, প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও উন্নাসিক, দুর্নীতির পথ গ্রহণযোগ্য নয়। বঙ্গবন্ধুর সারাজীবনের রাজনীতির আদর্শিক পথ ত্যাগের, মানুষের কল্যাণের, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের; নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের নয়। আওয়ামী লীগকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েই আদর্শিক, ত্যাগের রাজনীতির পথে ভোগবিলাস, বিত্তবৈভব গড়ার মোহ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যে দল স্বাধীনতা সংগ্রাম, সুমহান মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জাতির মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ও পরবর্তীকালে তার উত্তরাধিকারের নেতৃত্বে আত্মোৎসর্গ করা নিরন্তর সংগ্রাম করেছে; সেই দল তার পথ থেকে বিচ্যুত হতে পারে না। দলের প্রতি, নেতৃত্বের প্রতি হৃদয়নিঃসৃত আবেগ, অনুভূতিপ্রবণ আদর্শিক নেতাকর্মী নিজেরা নিজেরা ব্যক্তিস্বার্থে লোভের পথে দ্বন্দ্ব, সংঘাত, সহিংসতায় যেমন লিপ্ত হতে পারে না; তেমনি ক্ষমতার দম্ভে, উন্নাসিক আচরণে মানুষের মনকে বিগড়ে দিয়ে দলকে জনবিচ্ছিন্ন করতে পারে না। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকেও এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আদর্শিক, সৎ, রাজনৈতিক তৃণমূল নেতৃত্বকে উঠে আসার সুযোগ করে দিতে হবে। দলের অভ্যন্তরে আদর্শিক রাজনীতির পথে সাংগঠনিক কর্মকা-ে গণতান্ত্রিক চর্চা বাড়াতে হবে। ব্যবসায়ী, আমলাদের আগ্রাসন থেকে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের রক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। লুটেরা সিন্ডিকেটকে তিরস্কৃত করে দূরে সরিয়ে দলকে বাণিজ্যিকীকরণের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করতে হবে। আওয়ামী লীগকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেদের প্রশ্ন করতে হবে, এই দল বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক, গণমুখী কল্যাণের পথে গণমানুষের দল হয়ে থাকবে নাকি লুটেরা গোষ্ঠীর প্লাটফর্ম হবে অসুস্থ রাজনীতি, ভোগবিলাসের প্রচলিত ধারাকে বহন করে?
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক