আসামের নাগরিক তালিকায় বাদ পড়ছেন বাঙালিরা
ভারতের আসাম রাজ্যে জাতীয় নাগরিক তালিকার (এনআরসি) প্রথম যে খসড়া প্রকাশিত হয়েছে, তাতে রয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার নেতা পরেশ বড়ুয়ার নাম। অথচ দীর্ঘদিন ধরে এই রাজ্যে বাস করছেন এমন অনেক মানুষের নাম ওই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আর এ নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। অভিযোগ উঠেছে, জাতীয় নাগরিক তালিকার যে প্রথম খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে, তা থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ বাঙালির নাম বাদ পড়েছে। বিশেষ করে আসামের বাঙালি অধ্যুষিত বরাক উপত্যকা থেকে জাতীয় নাগরিক তালিকায় নথিভুক্তির হার সবচেয়ে কম। ফলে যাদের নাম তালিকায় ওঠেনি, তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় ভুগছেন। অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ তালিকাই শেষ নয়। আরো তালিকা প্রকাশ করা হবে। গত ৩১ ডিসেম্বর মধ্যরাতে প্রকাশিত প্রথম খসড়া তালিকায় যাদের নাম নেই, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-আসামের বিরোধী দলের নেতা ধুবড়ির সংসদ সদস্য অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ) প্রধান বদরুদ্দিন আজমল, তার ছেলে যমুনামুখের বিধায়ক আবদুল রহিম আজমল, তার ভাই বরপেটার সংসদ সদস্য সিরাজুদ্দিন আজমল। আসাম রাজ্যে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। বৈধ ভারতীয় নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি চেয়ে মোট তিন কোটি ২৯ লাখ আবেদনকারী আবেদন জমা দেন। এর মধ্যে এক কোটি ৩৯ লাখ মানুষের নাম উঠেছে প্রথম প্রকাশিত তালিকায়। এ তালিকায় পরেশ বড়ুয়ার পাশাপাশি তার প্রয়াত মা মিলিকি বড়ুয়াসহ পরিবারের পাঁচজনের নাম উঠেছে। একই সঙ্গে উলফার অপর নেতা অরুণোদয় দোহতিয়া এবং বোড়ো জঙ্গিগোষ্ঠী এনডিএফবি নেতা বি বিদাইয়ের নামও উঠেছে। আসাম চুক্তি অনুসারে, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে যারা এই রাজ্যে বসবাস করেছেন, শুধু তারাই নাগরিকত্বের অধিকারী। সেই চুক্তি মেনেই এবার তালিকায় নাম তোলার প্রক্রিয়া চলছে। যদিও ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্সের এই প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার বক্তব্য, প্রক্রিয়াটি চলছে। অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ১৯৫১ সালের পর এই প্রথম আসামে জাতীয় নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হলো।