আ.লীগের নির্বাচনী টার্গেটে নতুন ভোটার
ঢাকা : আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত নির্বিঘ্ন থাকতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে বেশ কিছু কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি। এর মধ্যে রয়েছে, সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার মধ্য দিয়ে ভোটার বাড়ানো, সংগঠনের ভেতরে বিরাজমান দ্বন্ধ-কোন্দল মিটিয়ে তৃণমুল পর্যন্ত ঐক্য সুদৃঢ় করা, সরকারের উন্নয়ন প্রচারণা গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে দেওয়া এবং অদৃশ্য উন্নয়ন কর্মকা- জনগণের কাছে দৃশমান করে তোলা। এসব কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে চায় দলটি। ক্ষমতাসীন দলটির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে এসব কর্মপরিকল্পনার কথা জানা গেছে।
নীতি-নির্ধারণী মহল জানিয়েছে, আগামী নির্বাচনের আগে দলীয় ঐক্য নিশ্চিত করা ও উন্নয়ন কর্মকা- দৃশমান করার অন্যতম লক্ষ্য হলো ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। আওয়ামী লীগ এবার ভোটারদারে দরজায় যাবে সরকারের করা উন্নয়ন কর্মকান্ডর ফিরিস্তি নিয়ে। দুই মেয়াদে সরকার কী করেছে, তার বিস্তারিত তুলে ধরবে ভোটারদের কাছে। এসব চিত্র তুলে ধরে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে ভোট চাইবে। অন্যদিকে ২০০১-০৬ মেয়াদে বিএনপির শাসনামলের দুর্নীতি, লুটপাট ও দুঃশাসনের চিত্রও তুলে ধরবে।
ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা মনে করেন, বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে, এটা প্রায় নিশ্চিত আওয়ামী লীগ। তাই চার দলীয় জোট সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট-দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরবে নির্বাচনি প্রচারণায়। আর এই প্রচারণা সফল হলে এর সুফলও ক্ষমতাসীনদের ঘরে আসতে পারে।
আগামী নির্বাচনের আগে কিভাবে ভোট বাড়ানো যায়, ইতোমধ্যে সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। ভোট বাড়ানোর এই লক্ষ্যে আগে দলীয় দ্বন্ধ-কোন্দল নিরসন করতে চায় দলটি। তারপরই ঐক্যবদ্ধভাবে নামবে ভোট বাড়ানোর কৌশল নিয়ে। এ জন্য ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে যাদের বয়স, তাদের দলে টানার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বিশেষ করে একাদশ সংসদ নির্বাচনে যারা নতুন ভোটার তাদের টার্গেট করে ভোটার বাড়ানো প্রক্রিয়ায় হাঁটছে দলটি। তাই নতুন ভোটারদের দলে ভেড়াতে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি, শিক্ষা বৃত্তি দেওয়া, সরকারি-বেসরকারি কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ তথ্য-প্রযুক্তি খাতে যেসব উন্নয়ন করেছে সরকার, তা প্রচার করা হবে।
পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিগুলোকে কাছে টানতে মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিসহ সরকার দেশকে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় গড়ে তুলতে কী কী কাজ করেছে, তাও ফলাও করে প্রচার করবে ক্ষমতাসীন দলটি।
নীতি-নির্ধারণী মহল জানিয়েছেন, সরকার যে গতিতে চলছে, তা চলমান রাখাই আগামী নির্বাচন পর্যন্ত চ্যালেঞ্জ আওয়ামী লীগের। এছাড়া পরিস্থিতি যেদিকে নিয়ে সেদিকে যাবে, সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তা মোকাবিলা করা হবে।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আগামী নির্বাচন পর্যন্ত সরকার যে গতিতে চলছে, সেই গতিপথ কেউ যেন বাধাগ্রস্ত না করতে পারে, সেদিকে নজর থাকবে আমাদের। সরকারের চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে তৃতীয় মেয়াদেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খলিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কর্মপরিকল্পনা একটাই। তা হলো নির্বাচন পর্যন্ত জঞ্ঝাটমুক্ত থাকা। সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া।’ যথাযথভাবে উন্নয়ন প্রচার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পারলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।