ইসলামিক স্টেটের ‘বাংলাদেশি যোদ্ধার পরিচয় পাওয়াগেছে
আমেরিকা-ভিত্তিক ওয়েবসাইট সাইট ইনটিলিজেন্স তাদের খবরে যে আত্মঘাতী বাংলাদেশি বোমারুর ছবি প্রকাশ করেছে তার পরিচয় নিশ্চিত করেছে পরিবার ও বন্ধুরা। ইসলামিক স্টেটের বাংলাদেশি যোদ্ধা হিসেবে প্রকাশিত ওই আত্মঘাতী বোমারুর নাম নিয়াজ মোর্শেদ রাজা। মি: মোর্শেদের বোন জান্নাতুল মাওয়া বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন যে হামলায় নিহত ব্যক্তিই তাঁর ছোট ভাই। নিয়াজ মোর্শেদ সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে? নিয়াজ মোর্শেদের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার খান্দাকিয়ায়। তাঁর বাবার নাম একেএম কামালউদ্দিন আহমেদ ও মায়ের নাম মাহবুবা কামাল। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে নিয়াজ মোর্শেদ ছিলেন সবার ছোট। চট্ট্রগ্রামের সামার স্কুলে পড়াশোনা শুরু করলেও পুরো পরিবার এক সময় জাম্বিয়ায় চলে যায়। মি: মোর্শেদের বাবা সেখানে একটি ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করতেন। জাম্বিয়ার লুসাকাতেই ‘ও’ লেভেল পাশ করেন নিয়াজ মোর্শেদ। তারপর বাংলাদেশ থেকে ‘এ’ লেভেল পাশ করে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান তিনি। সেখানে ব্রুকলিন ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যবসায় প্রশাসন ও তথ্যপ্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন মি: মোর্শেদ। তবে গ্র্যাজুয়েশনের পর দেশে ফিরে আসেন তিনি – কারণ তাঁর বাবা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
মি: মোর্শেদের মেজ বোন জান্নাতুল মাওয়া বলছিলেন “সে সময় নিয়াজ অন্যরকম একটা ছেলে ছিল। তার পার্টি খুব পছন্দ ছিল। এই জেনারেশনের ছেলেপুলেরা যেমন হয় আরকি। মজা-টজা করতো”। কবে থেকে বদলে গেলেন নিয়াজ? সন-তারিখ কোনকিছু উল্লেখ করতে না পারলেও জান্নাতুল মাওয়া জানান যে হঠাৎ করেই এক সময় বদলে যান নিয়াজ। পার্টি-প্রিয় ছেলে থেকে হয়ে ওঠেন ধর্মপ্রিয়। “ওর বদলটা হঠাৎই হয়। দেখলাম ও নামাজ-কালাম পড়ছে, পোশাক-আশাকেও পরিবর্তন এসেছে। আমরা খুশিই হয়েছিলাম। ধর্মের প্রতি মনোযোগী হয়েছে। আগের লাইফ থাকলে তো নিশ্চয়ই বাবা-মা’য়ের কাছে থাকতো না। ও বাবা-মায়ের খুব যত্ন নিতো”। “ওর বদলে যাওয়া দেখে আমাদের একবারও খারাপ কিছু মনে হয়নি। ওরা দুই পিঠাপিঠি ভাইবোন, দু’জনেই নামাজ-কালাম পড়তো। আমাদের ভালোই লাগতো। অন্য কোন কাজে সমস্যা হয়নি। অফিস করতো ঠিকমতো। ও এক্সট্রিমিস্ট হয়ে যাচ্ছে এমন কোন কিছু আমাদের মাথায় তো একেবারেই আসেনি”- বলছিলেন নিয়াজের মেজ বোন।