ইসির পুনর্গঠন দাবি বিএনপির
খুলনা সিটি করপোরেশনে (কেসিসি) সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে এর পুনর্গঠন দাবি করেছে বিএনপি। মঙ্গলবার (১৫ মে) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অযোগ্যতা, ব্যর্থতা ও পুলিশি হামলার কারণে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির নেতাকর্মীরা দাঁড়াতে পারেননি। সাধারণ ভোটাররাও ভোট দিতে পারেননি। এ কমিশন পুরোপুরি অযোগ্য, তাই ইসির পুনর্গঠন করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইসি পুরোপুরি বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে কাজ করছে। এ সরকারের সাফল্য বা দুঃশাসন যা-ই বলি না কেন, তা হচ্ছে তারা পুলিশকে বিরোধী দলের প্রতিপক্ষ বানিয়ে তুলেছে। অনেক জায়গায় পুলিশ নিজ উদ্যোগেই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। সরকার এই নির্বাচনে গণমাধ্যমকে তাদের নিজেদের মতো করে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে। টিভির খবর এবং খুলনা থেকে যে খবর পেয়েছি তার মধ্যে কোনও মিল নেই।’ খুলনায় সিটি করপোরেশনে কোনও নির্বাচন হয়নি অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ যদি সেনাবাহিনী থাকতো, তাহলে খুলনা নির্বাচনের এই দশা হতো না। জয়-পরাজয় আলাদা বিষয়। কিন্তু প্রতিপক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না, তারা এজেন্টদের বের করে দেবে। এটা নির্বাচন হতে পারে না, এটা নির্বাচন নয়। শুনেছি খুলনায় ভোটের কাস্টিং দেখানো হয়েছে ৬০ ভাগের ওপরে। অথচ দুপুরের পরে কোনও কেন্দ্রেই কোনও ভোটার দেখা যায়নি।’’ তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি কেন্দ্রের সামনে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা বুকে নৌকা প্রতীক লাগিয়ে সাধারণ ভোটারদেরও আসতে দেয়নি। এই অবস্থায় বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। আমাদের এই নির্বাচনি ব্যবস্থা প্রহসনে পরিণত হয়েছে।’
খুলনায় দলের শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো থাকার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খুলনায় আমাদের শক্তিশালী সংগঠন আছে। গত নির্বাচনে আমাদের প্রার্থী বহু ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিলেন। খুলনা শহরের যে আসন, সেখান থেকে আমাদের প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। সেখানে শুধু নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতার কারণে, পুলিশি হামলার মাধ্যমে বিএনপিকে সেখানে তারা (সরকার) দাঁড়াতেই দেয়নি।’ দেশে বর্তমানে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিস্থিতি নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্রের কোনও জায়গা নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার পরিস্থিতি নেই। সবকিছু মিলিয়ে দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সরকার বলছে নির্বাচন (জাতীয় সংসদ) হবে; কিন্তু খালেদা জিয়াকে ছাড়া কীভাবে নির্বাচন হবে?’ তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। সরকারের তল্পিবাহক ইসিকে পুনর্গঠন করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।