এক মাসের ছুটি চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি
অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে এক মাসের ছুটি চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা। আইন মন্ত্রণালয় ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রপতির কাছে এই ছুটির আবেদন করেন তিনি। ৩৯ দিন পর মঙ্গলবার খুলছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিন থেকেই তিনি ছুটিতে যাওয়ার আবেদন করলেন। এখন নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রজ্ঞাপন জারি করবেন তার অবর্তমানে প্রধান বিচারপতি হিসেবে কাকে দায়িত্ব দেয়া হবে।তার (প্রধান বিচারপতির) ছুটিকালীন বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা ও বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অথবা পর্যায়ক্রমে তাদের দুজনকেই প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার চাকরির মেয়াদ শেষ হবে। ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পরপরই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সরকারের টানাপোড়েন শুরু হয়। এই টানাপোড়েন প্রকাশ্য রূপ নেয় প্রধান বিচারপতি বেঞ্চে বসে পাকিস্তানের রায়ের প্রতিক্রিয়ার উদাহরণ টানলে। আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতা এবং অঙ্গসংগঠন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রধান বিচারপতির সমালোচনা শুরু করেন। সবাই প্রকাশ্যে তার পদত্যাগ দাবি করে আসছিলেন।এরপর এক বিবৃতিতে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, তার বক্তব্য গণমাধ্যমে ভুলভাবে এসেছে, ফলে তাকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে। ভবিষ্যতে তার বক্তব্য প্রচারে তিনি সর্বাধিক সতর্ক থাকার অাহ্বান করেন।
চাপে নয়,অসুস্থতার কারণে ছুটি চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি’
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা চাপে নয়, অসুস্থতার কারণে এক মাসের ছুটি চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সোমবার বিকালে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।দেশের সর্বোচ্চ এ আইন কর্মকর্তা বলেন, ‘অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে উনি এক মাসের ছুটি চেয়েছেন। বিষয়টি তার ব্যক্তিগত, তিনি ছুটি চাইতেই পারেন। এটা নিয়ে তো অবাক হওয়ার কিছু নেই।’মাহবুবে আলম বলেন, ‘একজন মানুষের সুবিধা-অসুবিধা থাকতেই পারে। তিনি বিদেশ থেকে আসার পর আমার সঙ্গে দেখা হয়নি। জানি না ছুটির কী কারণ?’প্রধান বিচারপতির ছুটি চাওয়াটা নজিরবিহীন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে আমি মনে করি, তার ছুটি চাওয়ার বিষয়টি নজিরবিহীন কোনো ঘটনা নয়। তার সমস্যা থাকতেই পারে।’ ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে চাপে পড়ে প্রধান বিচারপতি ছুটি চেয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ষোড়শ সংশোধনীর মামলায় আরও বিচারপতিরা ছিলেন। উনি একা রায় দেননি। তাই তার চাপে পড়ার কোনো কারণ নেই।’সোমবার বিকালে রাষ্ট্রপতির কাছে এক মাসের ছুটি চেয়ে আবেদন করেন প্রধান বিচারপতি। সংবিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি অনুপস্থিতিতে জেষ্ঠ্য বিচারপতি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সেই হিসেবে বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহহাব মিঞার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করার কথা। তবে এখনো এ সংক্রান্ত কোনো প্রজ্ঞাপন আইন মন্ত্রণালয় থেকে এখনো দেয়া হয়নি।প্রসঙ্গত, আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার চাকরির মেয়াদ শেষ হবে।