এখন সব কাজে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ লাগে: মেনন
এখন সব কাজে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ লাগে। তার নির্দেশ ছাড়া কেউ কারও কথা শুনতে চায় না বলে জানিয়েছেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের স্পেকট্রা কনভেনশন হলে ‘প্রতিবন্ধীতা অন্তর্ভূক্তিমূলক জাতীয় বাজেট ২০১৯-২০’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা জানান। প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষা নিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের ভাতার পরিমাণ ও সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আজই আমরা (সংসদীয় কমিটি) সুপারিশ করেছি। প্রধানমন্ত্রী সনদধারী সব প্রতিবন্ধীদের ভাতা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেটা বাস্তবায়নে কাজ হচ্ছে।’ প্রতিবন্ধীদের সার্ভে নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা কত, তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। বাংলাদেশ ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিক (বিবিএস) এর তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীদের সংখ্যা ১৫%। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডাব্লিউআইচও) আর পরিসংখ্যান মতে এ সংখ্যা ১৭%। সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকায় অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই বিভিন্ন এনজিওকে সম্পৃক্ত করে সঠিক পরিসংখ্যান তৈরি করতে হবে।’
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি আরও বলেন, ‘কোথাও জরিপ কাজ শুরু হলে টাউট-বাটপাররা আঁকড়ে ধরে। কারণ, এর সঙ্গে সরকারি অনুদানের একটা বিষয় থাকে। আমি মন্ত্রী থাকাকালীন অনেকের তদবির পাই। তারা প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কাজ করতে অনুদান চায়। আমি পরিদর্শনে গিয়ে দেখি, তাদের একটা জমি আর ঘর ছাড়া কিছুই নেই। অথচ তারা দাবি করে তাদের প্রতিষ্ঠান আছে- অনুদান দিলে কাজ করবে। প্রতিবন্ধী ছাড়াও অটিস্টিক বাচ্চাদের প্রোগ্রাম নিয়েও তারা বাণিজ্য করতে চায়। এসব বাচ্চাদের নিয়ে তো খেলার সুযোগ দেয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে জরিপের সময় এ বিষয় গুলোতে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে, যাতে তারা এটিকে প্রভাবিত করতে না পারে।’ এক বক্তার সূত্র ধরে তিনি বলেন, ‘প্রতিবন্ধী সুরক্ষায় জাতীয় সমন্বয় কমিটির মিটিংয়ে সচিবদের আনা মুশকিল। আমি অনেক কষ্টে একবার একটা মিটিং করেছি, সেখানে একজন মাত্র সচিব এসেছেন, যার নিজের সন্তানই প্রতিবন্ধী। তিনি হয়তো নিজের কষ্ট থেকেই এসেছেন। বাকিরা অনেক ব্যস্ত, সচিবদের অনেক কাজ। তারা আসতে পারেন না।’
মেনন বলেন, ‘এখন এমন বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে; সব কাজেই প্রধানমন্ত্রীকে বলতে হয়। তার নির্দেশ ছাড়া কারও কথা শুনে না প্রশাসন। ভিকটিম নুসরাতকে সিঙ্গাপুর নেয়ার নির্দেশও প্রধানমন্ত্রীকে দিতে হয়। আবার নুসরাতে কিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সত্ত্বেও এসপি লেখে ওসি কোনো অপরাধ করেনি!’ এ সময় সাবেক এ সমাজকল্যাণমন্ত্রী ‘প্রতিবন্ধী’ সংজ্ঞা নির্ধারণ করার তাগিদ দেন। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে সোশ্যাল জাস্টিস বা ডেভেলাপমেন্ট রাখার বিষয়েও কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি সম্মতি দিয়েছেন। পরে নির্বাচন চলে আসে, এটি আর এগোয়নি।’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। এক্সেস বাংলাদেশের সভাপতি সিএম তোফায়েল সামির সভাপতিত্বে এতে আরও আলোচনা করেন- প্রতিবন্ধী বিশেষজ্ঞ মনসুর আহমেদ চৌধুরী, বিবিডিএন এর সভাপতি সালাউদ্দিন কাশেম খান, এক্সেস বাংলাদেশের আলবার্ট মোল্লা, প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদের সভাপতি নাসিমা আকতার প্রমুখ।