সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে রাডার ক্রয় দুর্নীতিসংক্রান্ত মামলায় নতুন সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ বাতিল করে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে দুদকের করা রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যর বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। এরশাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম। এ রায়ে এরশাদের বিরুদ্ধে করা ২৫ বছর আগের বিমানের রাডার ক্রয় সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা নিষ্পত্তিতে আর বাধা নেই। এ বিষয়ে খুরশিদ আলম খান জানান, রাডার ক্রয়সংক্রান্ত মামলাটি বিচারিক আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আপিল বিভাগের এ আদেশের ফলে এ মামলায় নুতন করে সাক্ষী নেওয়ার আর কোনো সুযোগ থাকল না।

গত ৮ জানুয়ারি রাডার ক্রয় সংক্রান্ত মামলায় নতুন সাক্ষ্য গ্রহণে দুদকের আবেদন খারিজ করেন আপিল বিভাগ। পরে এর রায়টি পুনর্বিবেচনার আবেদন করে দুদক। গত ২৪ নভেম্বর এরশাদের রাডার দুর্নীতি ক্রয়সংক্রান্ত মামলায় বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের অনুমতি ও ৩১ মার্চের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের বেঞ্চ। পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন এই মামলার আসামি বিমান বাহিনীর প্রাক্তন প্রধান সুলতান মাহমুদ। এরশাদ ছাড়া এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিমান বাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান সুলতান মাহমুদ ও ইউনাইটেড ট্রেডার্সের পরিচালক এ কে এম মুসা। মামলার শুরু থেকে মুসা পলাতক রয়েছেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মামলাটি এখন যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে। মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলাটি দায়ের করে। ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এই মামলায় ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষী নিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, তৎকালীন বিমান বাহিনী প্রধান সদর উদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাছে বাহিনীর জন্য যুগোপযোগী রাডার ক্রয়ের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানি নির্মিত অত্যাধুনিক একটি হাই পাওয়ার রাডার ও দুটি লো লেভেল রাডার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। তৎকালীন সেনাবাহিনী প্রধান এরশাদসহ অপর আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে থমসন সিএসএফ কোম্পানির রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিং কোম্পানির রাডার কেনে। এতে সরকারের ৬৪ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn