এ সপ্তাহ থেকেই আরও কঠোর ও ব্যয়বহুল হচ্ছে ব্রিটিশ ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া। ইউকে হোম অফিস থেকে গত বছর এ সংক্রান্ত নীতিমালা ঘোষণা করা হয়। বিধি অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বহির্ভূত দেশগুলো থেকে শিক্ষক, সেবিকা ও সমাজকর্মী হিসেবে যুক্তরাজ্যে বসবাস ও কাজের ভিসার (টায়ার টু ভিসা) আবেদনকারীদের এখন থেকে ফরমের সঙ্গে নিজ দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত না থাকার সনদ যুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন বহির্ভূত অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রে ৬ এপ্রিল থেকে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে।যেসব কোম্পানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে কর্মী নেবে তাদের বছরে এক হাজার পাউন্ড ‘ইমিগ্রেশন স্কিলস চার্জ’ গুনতে হবে। ২০১৬ সালের মার্চেই এ নিয়ম ঘোষণা করা হয়; যা এখন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের হোম অফিস বলছে, বছরে প্রতি বিদেশি কর্মীর জন্য এক হাজার পাউন্ড এবং ক্ষুদে দাতব্য সংস্থাগুলোর জন্য এই ইমিগ্রেশন স্কিলস চার্জের পরিমাণ হবে ৩৬৪ পাউন্ড। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান অভিবাসী কর্মী নিচ্ছে। এ ধরনের প্রবণতা কমাতেই সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকার চায় ব্রিটিশ কর্মীরা এ স্থান দখল করুক। শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ প্রাপ্ত বয়স্কদের নিয়ে কাজ করবেন এমন অভিবাসীদের জন্যও এই বিধি বিশেষভাবে কার্যকর হবে।
যুক্তরাজ্যের অভিবাসনমন্ত্রী রবার্ট গুডউইল বলেন, ‘সমাজের ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের নিয়ে বিদেশি অপরাধীদের কাজ করার কোনও সুযোগই থাকা উচিত নয়। অপরাধীদের ভিসা না দেওয়ার অধিকার আমাদের আগে থেকেই আছে। অপরাধের তথ্য যাচাই শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ প্রাপ্ত বয়স্কদের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত আরেকটি স্তর তৈরি করবে।’ ৬ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়া এই বিধি অনুসারে টায়ার টু বিভাগে নির্দিষ্ট পেশার জন্য আবেদনকারীদের অপরাধবিষয়ক তথ্য যাচাই করা হবে। আবেদনকারীদের দেশের সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গত ১ থেকে ১০ বছরে অপরাধে জড়িত না থাকার সনদ সংগ্রহ করতে হবে এবং তা ফরমের সঙ্গে জমা দিতে হবে। কোনও আবেদনকারীর সহযোগী থাকলে তাকেও এই সনদ দিতে হবে। বিধিতে বলা হয়েছে, যদি কোনও দেশে ‘যৌক্তিক কারণে’ এ ধরনের সনদ দেওয়ার প্রক্রিয়া না থাকে তাহলে বিধিটি শিথিল করা হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের প্রচলিত ভিসা আইনে, কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে যদি ৪ বা তার বেশি মেয়াদের কারাদণ্ডের রায় থাকে তাহলে যুক্তরাজ্য সরকার ওই ব্যক্তিকে ভিসা না দেওয়ার অধিকার রাখে। এর চেয়ে কম মেয়াদে কারাদণ্ডের রায় থাকা ব্যক্তিদের সাজাভোগের পর থেকে সর্বোচ্চ দশ বছরের জন্য যুক্তরাজ্যে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করার বিধানও রয়েছে আইনে। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টগুলোর জনবল স্বল্পতার কারণে দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশিরা স্বল্পকালীন ভিসা চালুর জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে যুক্তরাজ্যের হোম অফিস থেকে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কিছু বিবেচনায় নেই বলে জানা গেছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn