বৃটেনের টেমসাইড কাউন্সিলের বিশাল অঙ্কের কর পরিশোধ না করার অভিযোগ উঠেছে ম্যানচেস্টারের বাংলাদেশ এসিস্ট্যান্ট হাইকমিশনের বিরুদ্ধে। বিষয়টি পররাষ্ট্র সচিবের নোটিশেও এসেছে। এ নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় সচিব মাসুদ বিন মোমেন গতকাল মানবজমিনকে বলেন, উভয়ের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সমাধানে যাতে পৌঁছানো যায় এ জন্য সংশ্লিষ্ট মিশনের কাছে আমরা বিস্তারিত জানতে চেয়েছি। বৃটেনের দ্য ওল্ডহ্যামটাইমস এ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে একদিন আগে। সেই রিপোর্টে বাংলাদেশ মিশনসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে কর বাবদ কাউন্সিলের পাওনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে- প্রায় ৫ বছর ধরে কর পরিশোধ না হওয়া এবং অফিসার বদলের কারণে তা রীতিমতো তামাদি হয়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়ায় ‘মওকুফ’ ঘোষণা করা হয়েছে। টেমসাইড কাউন্সিলে এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলেও ওল্ডহ্যামের রিপোর্টে দাবি করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়- পরিশোধ হয়নি এমন মোট ৫ লাখ পাউন্ড দেনা মওকুফ করে দেয়ায় ক্ষেপেছেন বৃটেনের টেমসাইড কাউন্সিলের নেতারা।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড দেনা রয়েছে টেমসাইড কাউন্সিলের। ম্যানচেস্টারের বাংলাদেশ এসিস্ট্যান্ট হাইকমিশন ড্রয়লসডেন শহরের সিমার্ক হাউজ বিল্ডিংয়ের কাছেই অবস্থিত। সেখান থেকে কনস্যুলার সেবা প্রদান করা হয়। টেমসাইড কাউন্সিলের দাবি, বাংলাদেশ এসিস্ট্যান্ট হাইকমিশন ২০১৬ সাল থেকে কোনো ‘বিজনেস রেট’ প্রদান করেনি। ফলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাদের কাছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪৬ পাউন্ড পায়। কাউন্সিলের রিপোর্টে পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষকে ‘পলাতক’ দেখানো হয়েছে এবং উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই দেনা আর উদ্ধার সম্ভব নয়। স্থানীয় ডেমোক্রেসি রিপোর্টিং সার্ভিস থেকে বাংলাদেশ এসিস্ট্যান্ট হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি দাবি করে রিপোর্টে বলা হয়, পাওনা আদায় বিষয়ে গত সপ্তাহের কাউন্সিল ক্যাবিনেটে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। যেসব দেনা আদায় সম্ভব নয়, এমন মোট ৩ লাখ ৯৯ হাজার পাউন্ড মওকুফ করা হয়েছে। এগুলোকে অপরিশোধিত বিজনেস রেট এবং কাউন্সিল কর উল্লেখ করে বলা হয়, এ নিয়ে কাউন্সিল নেতা ব্রেন্ডা ওয়ারিংটন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে প্রতিষ্ঠানের কাছে ১ লাখ ৫৩ হাজার পাউন্ড দেনা রয়েছে, আমরা জানি তারা কারা বা কোথায় আছে। তাহলে কেন এই অর্থ উদ্ধার করা হচ্ছে না?
তিনি আরও বলেন, এখন মনে হচ্ছে, মানুষ প্রায়ই কাউন্সিল কর প্রদান না করার ক্ষেত্রে নানা রকম সুবিধা নিচ্ছে। দেউলিয়া বা পলাতক হলেই দায়মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে! আমরা এখন প্রায় ৪ লাখ পাউন্ডের বিষয়ে কথা বলছি। এটা অর্ধেক মিলিয়ন থেকে খুব বেশি কম না। এই অর্থ আমরা শিশু ও প্রবীণদের কল্যাণে ব্যয় করতে পারতাম। আমরা চাই এই অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহৃত হোক। কাউন্সিলর ওয়ারিংটন বিষয়টিকে ব্যুরো’র পার্লামেন্ট সদস্যের কাছে উত্থাপনের প্রস্তাব করেছেন। তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে এটা চলছে যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এই সমস্যাটা আমাদের কর্মীদের নয়। কারণ তারা দারুণভাবে কাজ করছে। সমস্যাটা হচ্ছে নিয়মের। এই মানুষগুলো আমাদের থেকে চুরি করছে। আমাদের এই অর্থগুলো প্রয়োজন যাতে আমরা মানুষকে সাহায্য করতে পারি।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১১৭ বার