স্পেনের কাতালোনিয়ায় অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনে স্বাধীনতাকামী দলগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। আজ শুক্রবার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, অল্প ব্যবধানে হলেও এগিয়ে রয়েছে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক দলগুলো। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর কাতালোনিয়ার বহিষ্কৃত নেতা কার্লোস পুজেমন স্পেনের সঙ্গে আলোচনার ডাক দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হতে পারে। এর আগে পুজেমন বলেন, মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফলে এটি পরিষ্কার যে কাতালোনিয়ায় স্পেন রাষ্ট্রের পরাজয় হয়েছে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও গতকালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে আগের চেয়ে ভোট কম পেয়েছে স্বাধীনতাকামী দলগুলো। অন্যদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে অচিরেই স্পেনের সরকার সভা ডাকবে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে স্বাধীনতাকামী দলগুলো মোট ১৩৫টি আসনের মধ্যে ৭০টিতে জয় পেয়েছে। তবে এর আগের নির্বাচনে তারা আরও দুটি আসন বেশি পেয়েছিল। কাতালানের এই আঞ্চলিক নির্বাচনে এবার রেকর্ডসংখ্যক ভোট পড়েছে। নির্বাচনে মোট ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে।

তবে বৃহস্পতিবারের নির্বাচনের পর কাতালোনিয়ায় সরকার গঠনের অধিকার কোন পক্ষ পাবে, তা এখনো স্পষ্ট হয়নি। বেলজিয়ামে কার্লোস পুজেমন বলেছেন, ‘কাতালোনিয়া স্বাধীন রাষ্ট্র হতে চায়। এটিই কাতালান মানুষের ইচ্ছা। আমি মনে করি, স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা কাজে দেয়নি। সংকট মোকাবিলায় আমাদের নতুন পদ্ধতি খুঁজতে হবে।’ স্পেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিত্তশালী একটি অঞ্চল কাতালোনিয়া। জনসংখ্যা ৭৫ লাখ। এর রাজধানী বার্সেলোনা। কেন্দ্রের বাধা উপেক্ষা করে গত ১ অক্টোবর গণভোটের আয়োজন করে কাতালোনিয়া। এতে ৯০ শতাংশ ভোটার কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেন। এটি অনুমোদন করে কাতালোনিয়ার পার্লামেন্ট। স্পেনের সাংবিধানিক আদালত এই পার্লামেন্টকে বরখাস্ত করেছিলেন। স্পেন সরকার এই গণভোটকে বেআইনি ও অসাংবিধানিক হিসেবে অভিহিত করে এসেছে। এ থেকেই সংকটের শুরু। স্পেন থেকে পুরোপুরি পৃথক হতে গত ২৭ অক্টোবর স্বাধীনতা ঘোষণা করে কাতালোনিয়া। পাল্টা জবাবে কাতালোনিয়ায় প্রত্যক্ষ শাসন জারি করে স্পেন সরকার। বহিষ্কার করা হয় ওই অঞ্চলের স্বাধীনতাকামী নেতা কার্লোস পুজেমনকে। পরে তিনি বেলজিয়ামে আশ্রয় নেন। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কাতালোনিয়ায় গতকাল ফের মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত। তাতেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় অঞ্চলটির স্বাধীনতা লাভের দাবি আরও জোরালো হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn