কারিগরি ত্রুটির কারণে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ স্থগিত
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য নির্ধারিত সময়ের ২ ঘণ্টা আগেই অপ্রত্যাশিত ঘটনার আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন স্পেসএক্স-এর প্রধান নির্বাহী এলন মাস্ক। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ৩টা ৪৭ মিনিটে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের লঞ্চ প্যাড-৩৯ এ থেকে স্যাটেলাইটটি কক্ষপথে উড়াল দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলেও কারিগরি ত্রুটির কারণে একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে তা স্থগিত করা হয়। পরে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ১৪ মিনিট থেকে পরবর্তী দুই ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গবন্ধু-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে বলে জানায় উৎক্ষেপণকারী প্রতিষ্ঠানটি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্পেসএক্স প্রধান বলেন, তিনি ২ ঘণ্টা আগেই জানতাম উৎক্ষেপণ সম্ভব হবে না। এ নিয়ে তখনই উদ্বেগও জানিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘যে কোনও কিছুই ঘটে যেতে পারে, যা অপ্রত্যাশিত।’ এর সাথে সবার কাছে শুভ কামনাও প্রত্যাশা করেছিলেন তিনি। এদিকে, উৎক্ষেপণ স্থগিতের পর স্পেসএক্স এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, ভূমি থেকে উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া এক মিনিট আগে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আজ থমকে যেতে হয়েছে। রকেট এবং পেলোড ভালো অবস্থায় আছে। আগামীকাল স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা ১৪ মিনিটে আবারও উৎক্ষেপণের লক্ষ্যে একটি দল কাজ শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ মহাকাশে পাঠানোর লক্ষ্যে রাশিয়ার উপগ্রহ কোম্পানি ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে কক্ষপথ (অরবিটাল স্লট) কেনে বাংলাদেশ। ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি রাশিয়ার কাছ থেকে মহাকাশের ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমায় দুই কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলারে (বাংলাদেশি প্রায় ২১৯ কোটি টাকায়) কেনা হয়েছে এ স্লট। বঙ্গবন্ধু-১ এর মাধ্যমে টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও বেতারসহ ৪০ ধরনের সেবা পাওয়া যাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেরিস্টোরিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে, এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সারাদেশে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা বহাল রাখা, পরিবেশ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ই-সেবা নিশ্চিত করবে। এখন দেশে প্রায় ৩০টি প্রাইভেট স্যাটেলাইট চ্যানেল সম্প্রচারে আছে। এসব চ্যানেল সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে স্যাটেলাইট ভাড়া নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট চালু হলে এসব স্যাটেলাইটের ভাড়া কমবে। আগে এসব সেবার জন্য দেশের টেলিভিশন চ্যানেল কিংবা টোলিযোগাযোগ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সিঙ্গাপুর, হংকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্যাটেলাইট ব্যবহার করতো। আর এখন এসব সেবা নিশ্চিত করবে স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১।