কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর রীতিমতো নড়েচড়ে বসেছে আওয়ামী লীগ। এখন থেকে ‘বিশৃঙ্খলা করলে আর কোনো ছাড় নেই’ এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে দলটি। এরই অংশ হিসেবে ৫৮ ইউনিয়নের ৬০ নেতাকে দল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ নেতাদের বিরুদ্ধে আগামী ১৬ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ৫৪ জেলার ৬৭টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহের অভিযোগ রয়েছে। বহিষ্কৃত নেতাদের অনেকেই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। কারও কারও বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীকে সমর্থন করার অভিযোগ রয়েছে।

গত ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার পরাজয়ের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ক্ষুব্ধ হন। তাদের মূল্যায়ন, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-বিবাদের কারণেই আঞ্জুম সুলতানা সীমা পরাজিত হয়েছেন। এই দ্বন্দ্ব-বিবাদের জন্য নেতারা একজন মন্ত্রী ও একজন এমপিকে দুষছেন। এ বিষয়টি নিয়ে নেতারা দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গেও কথা বলেছেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার কার্যক্রমে সম্পৃক্ত একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন, একজন মন্ত্রী ও একজন এমপির বিতর্কিত ভূমিকার কারণেই কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আশাপ্রদ ফল পাওয়া যায়নি। এ বিষয়টি নিয়ে তারা দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আলোচনা করবেন। আগামী ১২ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পরাজয়ের পরও দলের অনেক নেতার টনক নড়েনি। তারা এখনও গৃহদাহে জড়িয়ে আছেন। এ কারণে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে সাংগঠনিক সংকট আরও প্রকট রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে আগামী ১৬ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সার্বিক পরিস্থিতি রীতিমতো ঘোলাটে হয়ে গেছে। অনেকেই দলের সিদ্ধান্ত মানছেন না। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন। কিংবা বিদ্রোহী প্রার্থীকে সমর্থন করছেন। এ অবস্থায় বিদ্রোহ দমনে সাংগঠনিকভাবে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ গতকাল বুধবার রাতে জানিয়েছেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহের অভিযোগে ৬০ জন তৃণমূল নেতাকে দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত নেতারা ৫৪টি সাংগঠনিক জেলার আওতাধীন বিভিন্ন সাংগঠনিক শাখায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চূড়ান্তভাবে বহিষ্কারের পর এই নেতারা আর দলে ফেরার সুযোগ পাবেন না। অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনে বিদ্রোহে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে অনেক নেতাকে বহিষ্কার করা হলেও পরে বেশিরভাগকেই দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn