কূটনীতিক ফারুক চৌধুরী আর নেই
সিলেটের কৃতিসন্তান বিশিষ্ট কূটনীতিক ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক আহমদ চৌধুরী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। (আজ) বুধবার ভোর ৪টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন। দেশ স্বাধীনের প্রাক্কালে সিলেট থেকে উদ্ভাসিত যে কয়েকজন মানুষ স্বদেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজ কর্মদক্ষতায় পরিচিতি অর্জন করেছিলেন তাদের মধ্যে ফারুক আহমদ চৌধুরী অন্যতম। ফারুক চৌধুরীর শৈশব কেটেছে পিতা গিয়াসুদ্দিন আহমদের সঙ্গে বৃহত্তর সিলেটে ও ভারতের বর্তমান মেঘালয় ও আসামরাজ্যে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হলে আসাম থেকে তারা সপরিবারে পূর্বপাকিস্তানে চলে আসেন। নেত্রকোনার আঞ্জুমান হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক আর ঢাকা কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে ইন্টারমেডিয়েটে উত্তীর্ণ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৫ সালে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে তিনি ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন। এরপর পাকিস্তান সরকারের হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশেও তিনি দক্ষ ও যোগ্যতার সঙ্গে কূটনীতিকের দায়িত্ব পালন করেন।
সাহিত্যের প্রতি ছোটকাল থেকেই ঝোঁক ছিল ফারুক চৌধুরীর। তার প্রকাশিত আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘জীবনের বালুকাবেলায়’ বইটি শুধু কূটনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ দলিল নয়, বাংলা গদ্যসাহিত্যেরও অনন্য সংযোজন। এই বইয়ের জন্য ২০১৪ সালে পেয়েছেন আইএফআইসি ব্যাংক পুরস্কার এবং ২০১৫ সালে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার। কূটনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা এবং জীবনকালে ব্রিটিশ শাসন থেকে পাকিস্তান এবং তারপর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের গুরুত্বপূর্ণ পালাবদলের প্রক্রিয়ায় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, অনুভব তিনি বইটিতে তুলে ধরেন। দেশ দেশান্তর, প্রিয় ফারজানা, নানাক্ষণ নানাকথা, স্বদেশ স্বকাল স্বজন, সময়ের আবর্তে ইত্যাদি তারই লেখা বই।