ক্রিকেটারদের জন্য কঠোর হচ্ছে বিসিবি
সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদরা দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশের টি-টোয়েন্টি লীগে খেলে বেড়ান। এটি তাদের বড় আয়ের উৎসও। একটা সময় মনে করা হতো বিদেশী লীগে খেললে ক্রিকেটারদের উন্নতি হবে। কিন্তু ধীরে ধীরে তা দেশের জন্য হিতে বিপরীত হয়ে যাচ্ছে। সাকিব আইপিএল ছাড়াও বিগ ব্যাশ, সিপিএল, পিএসএলসহ চার পাঁচটি লীগে খেলেন। কিন্তু সম্প্রতি তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট থেকে ছুটি ও বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। এ সফরে বাংলাদেশ টেস্টে বাজে ভাবে হেরে যায়। এর আগে তরুণ পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ইংল্যান্ডে কাউন্টিতে খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়েন। তারপর গেল দুই বছরেও তিনি হারানো ছন্দ খুঁজে পাননি। এছাড়া জাতীয় লীগেও (এনসিএল) জাতীয় দলের ক্রিকেটারা অনুপস্থিত থাকেন। এসব কারণ চিন্তা করেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি দেশের ক্রিকেটারদের দুটির বেশি বিদেশী লীগে খেলতে এনওসি (ছাড়পত্র) না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। তিনি বলেন, ‘বোর্ড নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমাদের জাতীয় দলের যে সব ক্রিকেটার আছেন তাদের দেশের বাইরে দুটির বেশি লীগে খেলতে এনওসি দেয়া হবে না। বিষয়টি নিয়ে আমাদের অনেক দিন ধরেই চিন্তা-ভাবনা হচ্ছিল। সম্প্রতি কিছু কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি এবং আমাদের যে আসন্ন সিরিজগুলো আছে সেগুলো বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কারণ আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেটারদের জাতীয় দলের খেলায় উপস্থিতি চাই। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মূল উদ্দেশ্য।’
যে ক্রিকেটারদের নিয়ে এ সিদ্ধান্ত তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা হয়েছে কিনা তা নিয়ে সিইও বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি এটি বোর্ডের নীতিগত সিদ্ধান্ত। বোর্ড এ সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্রিকেটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমরা এ ব্যাপারে কেস টু কেস ডিল করবো।’ কবে নাগাদ এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে সিইও বলেন, ‘খুব দ্রুতই আমরা এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবো।’ শুধু তাই নয়, জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সম্প্রতি কিছু কর্মকাণ্ডও বোর্ডকে বেশ ভালোভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে সাকিব আল হাসানের টেস্ট থেকে বিশ্রাম চেয়ে ছুটিও অন্যতম। তবে সিইও সাকিবের নাম সরাসরি না বললেও, তিনি বলেন, ‘পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে দেখছি যে অনেক সময় আমাদের জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা আছেন তাদের সবাইকে আমরা প্রয়োজনে পাচ্ছি না। আমরা সবার সার্ভিসটাও পুরোপুরিভাবে পাচ্ছি না। এই সব কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড।’
তবে কতদিনের জন্য এ সিদ্ধান্ত? এ বিষয়ে সিইও বলেন, ‘হতে পারে এক বছরের জন্য বা আজীবন। এটি আমরা আগেই বলেছি কেস টু কেস হ্যান্ডেল করবো। এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটের বিষয়ে সবাইকে খেলতে হবে- এমন একটা নিদের্শনাও এসেছে। এখানে জাতীয় দলের বাইরে যারা ফ্রি থাকবে তাদের সবাইকেই খেলতে হবে ঘরোয়া লীগে’। হাথুরুসিংহে এলেই সিদ্ধান্ত প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। এরই মধ্যে বিসিবিতে এ কোচ তার পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে তিনি হয়তো শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলের হয়ে কাজ করার জন্য প্রস্তুত। তবে খুব দ্রুতই তিনি বাংলাদেশে আসবেন বিসিবির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্কটা মিটিয়ে ফেলতে। তবে বোর্ড চেষ্টা করছে হাথুরুসিংহেকে অন্তত আসন্ন শ্রীলঙ্কা সিরিজ পর্যন্ত রেখে দিতে। কোচের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে তা নিয়ে সিইও বলেন, ‘আপনারা জানেন যে কোচ ১৫ই নভেম্বরের পর বাংলাদেশে আসছেন। তিনি এলেই আমরা তার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবো।’