গুগলকে ২৭০ কোটি ডলার জরিমানা
বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলকে ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে ২৭০ কোটি ডলার জরিমানা করেছে ইউরোপিয়ান কমিশন। এ ধরনের অভিযোগে ইতিপূর্বে কোন কোম্পানিকে এত বিশাল অংকের জরিমানা করা হয়নি। খবর বিবিসির।গুগলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইন্টারনেটে কোন কিছু অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে অর্থাৎ ‘সার্চ ইঞ্জিন’ হিসেবে – গুগলের যে প্রাধান্য, তার সুযোগ নিচ্ছে তারা। বলা হয়, লোকে ইন্টারনেটে কোন জিনিস কিনতে গেলেই ‘গুগল শপিং’ নামের একটি সার্ভিস তাদের নিজেদের পছন্দমতো তৈরি করা তালিকাকে সবার আগে ক্রেতার সামনে তুলে ধরছে। কিন্তু কৌশলে এটা করে যাচ্ছিল গুগল? এ জন্য তারা ব্যবহার করছে গুগল শপিং নামে একটি সেবা। আপনি ইন্টারনেটে যেকোনো পণ্য খুঁজলেই সে সব জিনিসের ছবি, দাম, কোন দোকানে তা পাওয়া যায়, ক্রেতারা কোনটাকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন তার তুলনামূলক স্কোর – এসব আপনার সামনে তুলে ধরে গুগল শপিং।
এর মধ্যে সমস্যাটা কোথায়? সমস্যা হলো, আপনার অনুসন্ধানের এই ফলাফলটা ঠিক ‘স্বাভাবিক’ নয়। এর পাশেই দেখবেন লেখা আছে ‘স্পনসরড’ অর্থাৎ যে কোম্পানির জিনিসগুলো আপনি অন্যদের আগে দেখতে পাচ্ছেন – তারা এ সুযোগটা পাবার জন্য গুগলকে অর্থ দিয়েছে। আপনি ‘স্ক্রল’ করে তালিকার নিচের দিকে না গেলে অন্য কোম্পানির তৈরি একই জিনিস দেখতেই পাবেন না। তাছাড়া গুগল শপিং-এর বিজ্ঞাপনগুলোতে থাকে পণ্যের দাম ও ছবি – কিন্তু অন্যদের পণ্যের বিজ্ঞাপনে তা থাকে না। এখানেও তারা একটা বাড়তি আকর্ষণ তৈরি করছে। গুগল শপিং-এর এই কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে ইইউ তদন্ত করছে গত ৭ বছর ধরে। মাইক্রোসফটসহ অন্য কিছু কোম্পানির অভিযোগের পর ওই তদন্ত শুরু হয়েছিল। ইউরোপিয়ান কমিশনের রুলিং-এ বলা হয়েছে, গুগলকে যেভাবে অন্যদের প্রতিযোগিতা করার সুযোগ কেড়ে নিচ্ছে- তা ৯০ দিনের মধ্যে বন্ধ করতে হবে। গুগল যদি এটা না মানে, তাহলে তাদেরকে আরেক দফা জরিমানা করা হবে।
গুগল আভাস দিয়েছে, তারা এর বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কম্পিটিশন কমিশনার মার্গারেট ভেস্টাজার বলেন, গুগল যা করছে তা ইইউ আইনের লঙ্ঘন। তিনি বলেন, ‘এর ফলে অন্য কোম্পানিকে তাদের গুণাগুণ এবং সৃষ্টিশীলতা দিয়ে প্রতিযোগিতা করার সুযোগ কেড়ে নিচ্ছে, এবং ইউরোপের ভোক্তাদের প্রতিযোগিতার সুফল থেকে বঞ্চিত করছে।’ কেলকু নামে একটি অনলাইন শপিং সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী রিচার্ড স্টেবলস এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গুগলের এই বেআইনি কর্মকাণ্ডের ফলে বহু প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়ী এবং ক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।