লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য চাকরিতে গিয়ে প্রথম দিনেই লাশ হয়ে ফিরল সুনামগঞ্জের মেধাবী শিক্ষার্থী রমজান আলী (১৬)। নিহত রমজান দোয়ারাবাজার উপজেলার সমুজ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। সে একই উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের গিরিশনগর গ্রামের শাহ আলমের ছেলে। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সংসারে অভাব-অনটনের মধ্যে কোনোমতে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছিল রমজান আলী। তার বাবা শাহ আলম শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান। তিন ছেলে মেয়ের মধ্যে রমজান আলী বড়। মাস কয়েক আগে রমজান আলী স্থানীয় টেংরা উচ্চ বিদ্যালয় হতে সমুজ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর সে লেখাপড়ার খরচ যোগান দিতে না পারায় বৃহস্পতিবার পরিবারের কাউকে না জানিয়ে চাকরির উদ্দেশে একই গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে রিপন মিয়ার সঙ্গে নরসিংদীতে যায়। তার সহপাঠী রিপন মিয়া জানায়, সোমবার থেকে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ইটখোলাস্থ ‘আদরী গার্মেন্টস’ ফ্যাক্টরির ভেতরে পানির ট্যাংকি পরিষ্কারের কাজ পায়। প্রথম দিনই পানির ট্যাংকি পরিষ্কার করতে গিয়ে সেখানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। এ সময় তার চিৎকার শুনে অন্যান্য শ্রমিকসহ গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির লোকজন তাকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা তখন তাকে মৃত ঘোষণা করলে সেখানেই পুলিশ তার সুরতহাল রিপোর্ট করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে।
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার রাতে আদরী ফ্যাক্টরির নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে করে নিহত রমজান আলীর লাশ বাড়িতে পাঠায়। পথিমধ্যে রহস্যজনকভাবে ভৈরবে এসে অন্য একটি ভাড়াটে অ্যাম্বুলেন্সে করে তার লাশ দোয়ারাবাজারে পাঠানো হয়। তখনও আদরী গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির কেউ তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এমনকি লাশ বাড়ি পৌঁছেছে কি না সে খোঁজখবরও রাখেনি। দোয়ারাবাজার থানার ওসি আবুল হাশেম বলেন, নরসিংদীর শিবপুরে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে গিয়ে কলেজ ছাত্র রমজান আলী মারা গেছে বলে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে সেখানকার পুলিশ বিস্তারিত বলতে পারবে।