চেতনায় বঙ্গবন্ধু
ডা. শিরিন সাবিহা তন্বী –
আমি মাঝে মাঝেই অবাক হয়ে ভাবি, একটা ভাষণ! এ তো গান নয় যে, গীতিকার লিখেছেন, সুরকার সুর দিয়েছেন আর শিল্পী অনুশীলন করে তা গেয়েছেন! কবিতাও নয় যে, কবি লিখেছেন আর আবৃত্তিকার আবৃত্তি করেছেন! তাহলে এটা কী? এটা ছিল এক অলৌকিক সৃষ্টি। এক প্রেমিকের প্রেমের আকুতি! হ্যাঁ! এক উদাত্ত কন্ঠী, দায়িত্বশীল, সাহসী, প্রতিবাদী, বুদ্ধিদীপ্ত দেশ প্রেমিকের তার প্রিয় স্বদেশ আর ততোধিক প্রিয় দেশবাসীদের প্রতি ভালোবাসা আর দায়িত্বশীলতার বহিঃপ্রকাশ!
বঙ্গবন্ধু তার বুকের ক্যানভাসে পরাধীন প্রিয় বাংলাদেশকে নিয়ে যে কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছেন, তার ই আবৃত্তি করেছেন সাত মার্চ, একাত্তরে তার ঐতিহাসিক ভাষণে! ভাষণটা যতবার শুনি কেন জানি না প্রতিটি লোমকূপে শিহরণ জাগে! সচেতন হই অধিকারের জন্য! প্রতিবাদী হই অন্যায়ের বিরুদ্ধে! জানি যুগ যুগ ধরে এই ভাষণ কোটি কোটি বাঙালিকে উদ্বুদ্ধ করবে। একটি শিশুকে কেবল যদি ওই মহাত্মার স্নেহ, প্রেম, আদর্শ, সততা, প্রতিবাদ, সচেতনতা আর দেশপ্রেমের শিক্ষা দেওয়া যায়, সেই শিশু পরিণত হলে কখন ও পথভ্রষ্ট্র হবে না। অসৎ হবে না। এমন বটবৃক্ষ যে জাতির পিতা তারা কীভাবে ঘুষ দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে থাকে, আমি কেবল ভাবি। যখনই কোনো বৈপরীত্য উপস্থিত হয় জীবনে আমি চোখ বন্ধ করে কেবল একটি কথা ভাবি। এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু যদি পরতেন, কী করতেন! আমাকে সকলে সাহসী বলে! বিশ্বাস করুন, কেবল একটা পাহাড় সমান শক্তির বঙ্গবন্ধুকে আমি আমার ছোট্ট বুকটাতে লালন করি আমার মত করে। কম খেয়ে কম পরে একটা জীবন কাটে, অসম্মানে কাটে না। বঙ্গবন্ধুকে আজকাল অনেকে স্বার্থের দামে বিক্রি করে। বড্ড ঘৃণা হয়। তিনি তো গুণবাচক বিশেষ্য! তার কোনো কেনাবেচা হয় না।
বাঙালি ভাগ্যবান যে, এমন প্রশান্ত মহাসাগর আমাদের আছে। তার থেকে পানি নিয়ে সমৃদ্ধ হয়ে একটি বাংলাদেশ গড়লে তাতে সোনা ফলবেই। না। চকচকে সোনা না। স্নেহ-প্রেম-ভালোবাসা শ্রদ্বাবোধ আর সম্মানের অমূল্য রত্ন। আমি যে আমাকে চিনি তার সাহসিকতা, সচেতনতা আর প্রতিবাদের প্রায় সবটাই তাকে ভালোবেসে। তাই আজকের এই ঐতিহাসিক দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক বঙ্গবন্ধুকে আমরা যেন হৃদয়ে ধারণ করি। তার আদর্শ তার দেশপ্রেম ই হোক আমাদের চলার পথের পাথেয় !!!
ডা. শিরিন সাবিহা তন্বী : মেডিকেল অফিসার, শের-এ-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বরিশাল