ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডার টিমেও বাকাইয়োকোর দুর্দান্ত হেডে বুধবার ম্যানচেস্টার সিটিকে ৩-১ গোলে পরাজিত করে এ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লীগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে মোনাকো।ইংল্যান্ডের প্রথম লেগের ম্যাচে ৫-৩ গোলে পিছিয়ে থাকার পরে মোনাকোর জন্য সামনে এগিয়ে যাওয়া কিছুটা কঠিনই ছিল। কিন্তু ঘরের মাঠ স্টাদে লুইস টু’তে আট মিনিটেই তরুন স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপের গোলে স্বাগতিকরা এগিয়ে যায়।

এরপর ২৯ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফাবিনহো ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। লিরোয় সানের ৭১ মিনিটের গোলে সিটি দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৫ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। কিন্তু ম্যাচ শেষের ১৩ মিনিট আগে থমাস লিমারের ফ্রি-কিক থেকে বাকাইয়েকোর হেড মোনাকোকে দারুন এক জয় উপহার দেয়। বার্সেলোনার কাছে হেরে প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইর হতাশাজনক বিদায়ের পরে শুক্রবার নিঁওনে শেষ আটের ড্রয়ে একমাত্র দল হিসেবে ফ্রান্সের আশা টিকিয়ে রাখলো মোনাকো।

এদিকে ম্যানেজার হিসেবে পেপ গার্দিওলারা চ্যাম্পিয়নস লীগে এটাই এত দ্রুত বিদায়। ম্যাচ শেষে বিপি স্পোর্টসকে গার্দিওলা বলেছেন, ‘বিরতির পরে আমরা অসাধারণ খেলেছি। কিন্তু প্রথমার্ধেই আমরা মূলত পিছিয়ে পড়ি। যে কারনে বিরতির পরে দুর্দান্ত খেলেও তা যথেষ্ঠ ছিলনা। এমন হতেই পারে এবং আমাদের এর থেকেই শিক্ষা নিতে হবে। এই ধরনের প্রতিযোগিতায় আমাদের দলের খুব একটা অভিজ্ঞতা নেই।’

নিষেধাজ্ঞার কারনে মোনাকোর জয়ের নায়ক বাকাইয়োকো কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে খেলতে পারছেন না। কিন্তু দল শেষ আট নিশ্চিত করায় দারুন খুশি তিনি, চ্যাম্পিয়নস লীগে এ ধরনের জয় সত্যিই অসাধারণ, তার উপর আমি গোল করতে পেরেছি। আমি এটা আশাই করিনি। গত দুটি ম্যাচেই আমরা ভাল খেলছি, এখন আমাদের সামনে এগিয়ে যাবার পালা।

প্রথম লেগে দুই গোল করা তারকা স্ট্রাইকার রাদামেল ফ্যালকাও সময়মত কোমরের ইনজুরি কাটিয়ে সুস্থ হয়ে না ওঠায় ফ্রেঞ্চ লীগে শীর্ষে থাকা দলটি কিছুটা বিপাকে পড়ে। তার পরিবর্তে মাঠে নামানো হয় ভালেওে জার্মেইকে। রক্ষণভাগে নিষেধাজ্ঞায় থাকা কামিল গিলকের স্থানে মুল একাদশে ফিরেছেন জেমারসন। এটা ছিল কোচ হিসেবে গার্দিওলার ইউরোপে শততম ম্যাচ। সিটিজেনদের মূল একাদশে গার্দিওলা দুটি পরিবর্তন এনেছিলেন। নিকোলাস ওটামেন্ডি ও ইয়াইয়া টোরের জায়গায় তিনি সুযোগ দিয়েছিলেন গায়েল ক্লিচি ও আলেকসান্দার কোলারোভকে।

২০০৪ সালের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় করা মোনাকোর সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল কোচ লিওনার্দো জারদিমের অধীনে ভাল কিছু করে দেখানোর। ঐ বছর কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম লেগে ৪-২ গোলে পিছিয়ে থাকার পরে দারুনভাবে এ্যাওয়ে গোলে স্প্যানিশ জায়ান্টদের পরাজিত করেছিল ফ্রেঞ্চ দলটি। এবারের ফ্রেঞ্চ লীগে মৌসুমের অন্যতম সেরা তরুন প্রতিভা হিসেবে প্রমানিত ১৮ বছর বয়সী এমবাপের কল্যাণেই স্বাগতিকরা বেশ উজ্জীবিত ছিল। সিটি রক্ষনভাগকে নড়বড়ে করে দিয়ে মোনাকোর হয়ে প্রথম আক্রমনটাই করেছিলেন এমবাপে। বার্নার্ডো সিলভার লো ক্রস থেকে আট মিনিটেই এমবাপের শট সিটির আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক উইলি কাবালেরো রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

প্রথম লেগেও সিটি দু’বার পিছিয়ে পড়ে সমতা এনেছিল। কিন্তু এবার আর শেষ রক্ষ হলোনা। বিশেষ করে ২৯ মিনিটে সিটি রক্ষনভাগকে ফাঁকি দিয়ে বেঞ্জামিন মেন্ডির সহায়তা ফাবিনহোর গোলে মোনাকোর ব্যবধান দ্বিগুন হবার পাশাপাশি সিটিজেনরা হতাশায় ডুবে। এমবাপের দুর্দান্ত ফর্ম সিটির জন্য বারবার হুমকি হয়ে দেখা দিচিছল। কিন্তু প্রিমিয়ার লীগের দলটি ধীরে ধীরে ম্যাচে ফিরে আসে। রাহিম স্টার্লিং, সার্জিও আগুয়েরোদের কল্যাণে কয়েকটি আক্রমনের সুযোগ পায় ম্যান সিটি। তারই ধারাবাহিকতায় মোনাকোর ব্যাকলাইন ভেঙ্গে ৭১ মিনিটে সানে সফরকারীদের জন্য সৌভাগ্য বয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু ছয় মিনিট পরে লেমারের ফ্রি-কিক থেকে বাকাইয়োকোর হেড দলের জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি গার্দিওলাকে প্রথমবারের মত শেষ ১৬ থেকে বিদায় হতেও সহযোগিতা করে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn