ছাতকে কৃষকের সর্বশেষ সম্বলটুকুপও আর রইলোনা
চান মিয়া-
ছাতকে বোরো ফসলের মারাত্মক বিপর্যয়ের পর এবারে কৃষি ঋন নিয়ে আমন চাষাবাদে আশায় বুক বাঁধে উপজেলার প্রায় ৮৪হাজার কৃষক পরিবার। কিন্তু শ্রাবণ মাসের শেষে (৯আগষ্ট থেকে) প্রলঙ্করী বন্যায় আবারো তলিয়ে গেছে তাদের সর্বশেষ সম্বল রোপা আমনসহ সব বীজতলা। ফলে কৃষকের চোখে এখন সর্ষে ফুল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা- বলে মন্তব্য করছেন অনেকে। বন্যায় উপজেলার ১৩ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার রাস্তা-ঘাট, সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্টান, গবাদিপশু, হাঁস, মুরগি ও মৎস্য খামারসহ ঘরবাড়ি তলিয়ে মারাত্মক ক্ষতি করেছে। একইভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বিভিন্ন জাতের ফার্ম, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি-ঘর। পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় দু’লক্ষাধিক মানুষ। জানা গেছে, গত চৈত্র থেকে শ্রাবণ পর্যন্ত ৫মাসের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই কমবেশী বৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘ ৫মাসের মধ্যে ৮/১০দিন অনাবৃষ্টি ছাড়া প্রায় প্রতিদিনই প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। চলতি বন্যায় সুরমা, চেলা, ধলাই, মরা চেলা, সুনাই ও পিয়াইন নদীসহ সবগুলো পাহাড়ি নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ভারতীয় সীমন্তবর্তী ইসলামপুরও নোয়ারাই ইউপির মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাদ পড়েননি ছাতক সদর, কালারুকা, চরমহলা, দোলারবাজার, ভাতগাঁও, উত্তর খুরমা, দনি খুরমা, সিংচাপইড়, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাও, ছৈলা-আফজলাবাদ ইউপিসহ পৌরবাসিও। সুরমা নদী ৬০সে.মি, চেলা নদী ৬৫সে.মিও পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার ৭০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ছাতক-সিলেট রোডের ছাতকস্থ ফায়ার সার্ভিস এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ এখন প্রায় বন্ধ হবার পথে। সব মিলিয়ে উপজেলার প্রায় ১০হাজার হেক্টর আবদযোগ্য ভূমির বুনা চারা ও রোপা আমন এখন পানিতে তলিয়ে গেছে। এগুলো একেবারেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে ধারনা করছে কৃষকরা। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম রব্বানী মজুমদার ও প্রাথমিক শিা অফিসার মানিক চন্দ্র দাস প্রায় সবগুলো শিা প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনা পানিতে তলিয়ে গেছে। কৃষি অফিসার কেএম বদরুল হক জানান, বন্যার পানিতে রোপনকৃত আমন ফসলের সিংহভাগ এবয় প্রায় ৮০ভাগ বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারী সার্জন ডাক্তার আব্দুস শহিদ হোসেন জানান, বন্যায় উপজেলার বিপুল সংখ্যক হাঁস- মুরগের ফার্ম ও মৎস্য খামারের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এছাড়া চরম গো-খাদ্য সংকটের কবলে পড়েছে গবাদি পশুর ফার্মগুলো। এ ক্ষতি কাঠিয়ে উঠতে সরকারের কাছে সহজ শর্তে ঋন কার্যক্রম চালুর দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ ফার্ম ও খামার মালিকরা।