ছাতকে জনপ্রতিনিধিরা বনে যাচ্ছেন ‘কৃষক’!
মাহবুব আলম, ছাতক :: সুনামগঞ্জের ছাতকে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চলতি বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে এখানে ৪২৯ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ইতিমধ্যেই ধান সংগ্রহের জন্য তালিকা প্রস্তুতের কাজ প্রায় সম্পন্ন। কৃষকদের অভিযোগ থাকা স্বত্তেও অস্বচ্ছ পদ্ধতিতে প্রাথমিক পর্যায়ে যাচাইবাছাই ছাড়াই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের দেওয়া তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এসব জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই ধান-চালের বেপারী। কৃষি অফিসের যোগসাজশে ভুয়া কৃষি কার্ড তৈরি করে তাদের পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়স্বজনরা রাতারাতি কৃষক বনে যাচ্ছেন। ফলে প্রকৃত কৃষকরা তাদের ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রকৃত কৃষকদের অভিযোগ, এছাড়া কোনো প্রকার প্রচারণা ছাড়াই অনেকটা গোপনে ধান সংগ্রেহের কাজ শুরু করায় প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা সরকারের এই কার্যক্রমেরে খবর জানেন না।
সোমবার উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, মুক্তিরগাওঁ গ্রামের কৃষক সুনু মিয়া বিলাপ করছেন তার ধানের ন্যায্য মূল্য আদায়ের জন্য। তিনি জানান, জনপ্রতিনিধি ও সিন্ডিকেটের সদস্যদের তালিকা অনুযায়ী অকৃষক এবং ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে তালিকা সংগ্রহ করার কারণে ধান বিক্রির সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন প্রকৃত কৃষকরা। এলাকার কৃষকরা শুরু থেকে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচনের দাবি জানালেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানরা এসব বিষয়ে পাত্তা দিচ্ছেন না। ব্যবসায়ী জনপ্রতিনিধিদের দেয়া তালিকাই চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। ধান বিক্রি করতে কালারুকা ইউনিয়নের কৃষক সুনু মিয়া কৃষি কর্মকর্তার সাথে দেখা করার জন্য অফিসের বাইরে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলে তিনি অফিসে থাকা সত্ত্বেও ব্যস্ত আছেন বলে জানান। পরে তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ তুলে ধরেন। এ ব্যাপারে ছাতক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানরা তালিকা দিয়েছেন এগুলো যাচাইবাছাই হয়েছে। এখন তার কিছু করার নেই। উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান জানান, সরকারিভাবে ধান সংগ্রহে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির বেশ কয়েকটি অভিযোগ তিনি শুনেছেন। এসব তালিকা পুনরায় পর্যালোচনা হবে বলে তিনি জানান।