ছাতকে তরুণীকে ধর্ষণ: ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ধামাচাপার চেষ্টা
মুটোফোনে মিসকল। তারপর পরিচয় থেকে আলাপ। ভালোলাগা থেকে গভীর প্রেম। এক পর্যায়ে প্রেমিকের ডাকে বিয়ানীবাজার থেকে প্রেমিকা ছুটে এলো ছাতকে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমিকাকে বাড়িতে ১৪দিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে কথিত প্রেমিক আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে। গত ৭ মে থেকে ওই মেয়েটিকে ২১ মে পর্যন্ত ছাতক উপজেলার সৈদরগাঁও ইউনিয়নে ধারন গ্রামে আটকে রাখা হয়। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি পর স্থানীয় প্রভাবশালীরা সালিশ বৈঠকের নামে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মেয়েটির বাড়ি বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আব্দুল্লাপুর এলাকায় এবং প্রেমিক আব্দুল আলীম ছাতক উপজেলার সৈদরগাঁও ইউনিয়নের ধারন গ্রামের আব্দুল কাহারের পুত্র। তার মামা যুবলীগ নেতা বিলাল উদ্দিন উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। মূলত স্থানীয় প্রশাসনও এ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
২২ বছর বয়সী ওই মেয়েটি জানায়- গত ৭ মে আলিম ফোন করে তাকে বলে সিএনজি করে শেওলা জিরো পয়েন্টে চলে যেতে। সে জিরো পয়েন্টে থেকে নিয়ে সিলেটে ঘুরাঘুরি করে। রাত সাড়ে ১২টায় আমাকে নিয়ে আলিমের বাড়ী যায়। সে তার বাড়ীর আলগা একটি ঘরের বিছানায় নিয়ে আমাকে কোরআন শরিফের নামে কসম করে ফজরে আজান হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনবার আমাকে ধর্ষণ করে। আমি প্রেম করেছি, মন দিয়েছি আলিমকে পাওয়ার জন্য। তার জন্য আমি সব করতে পারি। তাকে না পেলে এ জীবন রাখার কোন মূল্য নেই। পুলিশ থেকে জনপ্রতিনিধি সবাই আমার বিষয়ে অবগত। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। আলিম আমাকে পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে করবে বলে ঘর ছাড়া করেছে। এখন কি করবো বুঝতে পারছি না।
কুড়ারবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন- সম্প্রতি সালিশ বৈঠকে মেয়েটিকে অপবাদ এবং সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার কারণে সে প্রেমিক আলিমের ঘরের দরজা বন্ধ করে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করে। সে অজ্ঞান হয়ে পড়লে বৈঠকের বিষয়টি অনেকটা অমীমাংসিত থেকে যায়। অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক থেকে উঠে পড়লে অজ্ঞান মেয়েকে আমাদের গাড়িতে তুলে দেয়া হয়। অনেকটা নিরুপায় হয়ে তাকে নিয়ে আমরা চলে আসি। আলিমের মামা ছাতকের উত্তর খুরমা ইউপি চেয়ারম্যান বিলাল মেয়ের পারিবারিক অবস্থা যেনে ৭০ হাজার টাকা দান করেন। এ টাকার ২০ হাজার টাকা মেয়েটির চাচার কাছে রয়েছে। ৫০ হাজার টাকা আমার কাছে। মেয়েটির মা জানান- তাদের কোন টাকার প্রয়োজন নাই। ছেলেটি হয় তার মেয়েকে বিয়ে করবে, না হলে তারা আইনের আশ্রয় নেবেন।
আজ শুক্রবার মুঠোফোনে ছাতক থানার ওসি (তদন্ত) আশরাফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। বিয়ানীবাজার থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তীর বলেন- ছাতক থানার ওসি মেয়েটির বিষয়ে আমাকে অবহিত করেন এবং তার বাড়ির ঠিকানা দিয়েছিলেন। আমি বিষয়টি জানার জন্য কুড়ারবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহেরকে অনুরোধ করি। কিন্তু এরপর সেখানে কি হয়েছে, বিষয়টি কিভাবে সমাধান হয়েছে, সেই বিষয়টি কোন পক্ষই অবহিত করেনি।