ছাতকে বন্যায় পানিবন্দি লাখো মানুষ
ছাতকে গত ৩দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ফের সর্বত্র বন্যা দেখা দিয়েছে। উপজেলার ৩টি নদী, খাল-বিল ও হাওর গুলোতে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় লাখো মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী আজ রোববার দুপুর পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৪৫ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ছাতক-সিলেট সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার আশংকা রয়েছে।
আকস্মিক বন্যায় রোপা আমন ও বীজতলা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমনের বীজতলা হরিয়ে এখন কৃষকরা দিশেহারা। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিনই নতুন-নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে উপজেলার সদরের সাথে গ্রামাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ অনেক স্থানে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন গ্রামীণ কাচা রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠার খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্ন অঞ্চলের গ্রামীন রাস্তা-ঘাটে পানি উঠে পড়ায় মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় দেখা দিয়েছে চরম বিপর্যয়। ফলে হাট-বাজার ও ব্যবসা-বাণিজ্যে পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। তাছাড়া হাওর-বিলসহ সর্বত্র ঢলের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গো-খাদ্যের অভাবে গবাধি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বানবাসি লোকজন। ছাতক-সিলেট সড়কের কয়েকটি স্থানে ঢলের পানি ছুই ছুই করছে। সড়কের কোথায় কিছু পানি উঠার খবর পাওয়া গেছে।
উপজেলার ইসলামপুর, ছাতক সদর, নোয়ারাই, কালারুকা, চরমহল্লা, জাউয়াবাজার, ভাতগাঁও, দক্ষিণ খুরমা, উত্তর খুরমা, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদরগাঁও, ছৈলা-আফজলাবাদ, সিংচাপইড় ও দোলারবাজার ইউনিয়নের একাধিক স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৩দিনের টানা বর্ষণে ইতিমধ্যেই উপজেলার প্রায় অধিকাংশ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন সব চেয়ে বেশী ক্ষতির সম্মূখীন। এই ইউনিয়নের প্রায় ৮০ভাগ লোকজন এখন পানিবন্ধি রয়েছেন। আকস্মিক বন্যায় রোপা আমন ও বীজতলা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি রোপা আমন বুনার সাথে-সাথেই বন্যায় তলিয়ে গেছে। অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম বদরুল হক বলেন, উপজেলার চলতি বছরে ৭শ’৪০হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চারা রোপন করা হয়। এর মধ্যে পাহাড়ি ঢলের পানিতে এখন পর্যন্ত ৫শ’৫০ হেক্টার জমির চারা পানিতে ডুবে আছে। এছাড়া ২শ’১০ হেক্টর বীজতলা এখন ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসির উল¬াহ খাঁন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশে উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক হয়েছে। বন্যা দূর্গতদের সার্বক্ষনিক যোগাযোগের জন্য কন্ট্রল রোম খোলা হয়েছে। স্থানীয় সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরী করতে বলা হয়েছে।