জগন্নাথপুরে’র নূর হত্যা নিয়ে ’পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
‘এ সময় গুলির মুহুর্মুহু আওয়াজে নারী-শিশুরা প্রাণ ভয়ে চিৎকার শুরু করে। সন্ত্রাসীরা বাড়ির আঙিনায় দোকানপাট ভাঙচুর, ধানের মিলে আগুন ধরিয়ে দেয়। উপায়ন্তর না পেয়ে জাবেদ আলম কোরেশী তার লাইসেন্সধারী বন্দুক হাতে নিয়ে আত্মরক্ষার্থে বাড়ির দেয়ালে গুলি ছুঁড়েন। ঘটনার পর আমরা জানতে পারি ফয়সল ও তার বাহিনীর এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণে নূর আলীসহ উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হন। তবে নূর আলীর হাতে ছিটা গুলি লাগলেও তেমন গুরুতর আহত হননি তিনি। ঘটনার পর উভয় পক্ষ এ নিয়ে মামলা দায়ের করে। আমাদের মামলায় ঘটনার মূল নায়কদের আসামী করলেও নূর আলীকে আমরা আসামী করিনি। কারণ নূর আলী আমাদের কোন প্রতিপক্ষ নয়।’ সরোয়ার আলম কোরেশী অভিযোগ করে বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে নূর আলীর স্ত্রীর পরিচয়ে লিলু বেগমের বক্তব্যে ফয়সলকে আত্মীয় হিসাবে উল্লেখ করেছেন। অথচ কোন কালেই ফয়সল এবং নূর আলীর মধ্যে কোন আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল না। নূর আলীর বাড়ি দক্ষিণ সুনামগঞ্জের আমরিয়া গ্রামে। ঘটনার দিন উপস্থিত নূর আলীর হাতে ছিটা গুলি লাগে। চিকিৎসার জন্যে গ্রাম থেকে হেঁটে এসে মোহাম্মদগঞ্জ বাজারে লেগুনায় উঠে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। অনেকেই সেদিন তার হাতে ছিটাগুলির চিহ্ন দেখেছেন। বুকে পিটে কোথাও কোন গুলির চিহ্ন পায়নি। জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো হয় তাকে। এই সুযোগে মানবতার দোহাই দিয়ে ফয়সল তার পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণের দায়িত্ব নেয়। চতুর ফয়সল নূর আলীকে সহজেই আয়ত্বে নিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিজেই ভর্তি করে দেন। নূর আলীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুইদিন পর ছেড়ে দেয়। কিন্তু ফয়সল এর আরো দুইদিন পরে তাকে ফের ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিলে ১১ দিনের মাথায় পেটে অপারেশনে তার মৃত্যু হয়। প্রশ্ন হলো নূর আলীকে দুইদিনের মাথায় ছাড় দেয়ার পর পুনরায় তাকে কেন ভর্তি করানো হলো। কিংবা গুরুতর আহত হলে প্রথমবার তাকে কেন আইসিইউতে ভর্তি করানো হলো না। পুলিশ ফয়সলকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে খুনের প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে আমাদের বিশ^াস।’ ‘সংবাদ সম্মেলনে ফয়সলকে নির্দোষ প্রমাণ করতে কথিত লিলু বেগম নূর আলীর স্ত্রীর পরিচয় দাবী করে বক্তব্য দেন। অথচ শ্রীধরপাশা গ্রামে সংঘটিত গুলিবর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী হামলা, দোকান লুটসহ যাবতীয় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও নূর আলী হত্যাকান্ডের মূল নায়ক হচ্ছে অবৈধ অস্ত্রধারী এই ফয়সল। সে আমাদের মামলার প্রধান আসামী। তাকে যত দ্রæত সম্ভব গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে নূর আলী হত্যার প্রকৃত খুনের রহস্য জানা যাবে।’